নিজস্ব প্রতিবেদক
যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসন্ত্রাসের মামলায় একের পর এক সাজা হওয়া ব্যক্তিরা দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় সাজাপ্রাপ্ত হচ্ছেন। তারা রাজনৈতিকভাবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর কর্মী কিন্তু সাজা বিএনপির হচ্ছে এমন বক্তব্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক মাস আগে পৃথক চারটি মামলায় সোমবার আদালতের রায়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের আরও ৩০ নেতা–কর্মীর সাজা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় তাঁদের কেউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
২০১৩, ২০১৬ ও ২০১৮ সালের মধ্যে রাজধানীর হাজারীবাগ, রামপুরা, ধানমন্ডি ও মুগদা থানায় চারটি মামলা হয়। এসব মামলায় বেআইনি সমাবেশ, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, যানবাহনে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া এবং ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয় বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে। আদালতের রায়ে যাঁদের সাজা হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগ থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা–কর্মী। এ নিয়ে গত সাড়ে তিন মাসে ৪৯টি মামলায় ৭৬৮ জনের সাজা হয়েছে।
পুলিশের করা মামলার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর হাজারীবাগের ১৫ নম্বর স্টাফ কোয়ার্টার সড়কের নিউ ভাই ভাই হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের সামনে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা–কর্মীরা সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করার জন্য গোপন বৈঠকে মিলিত হন। খবর পেয়ে হাজারীবাগ থানার এসআই আল মোমেনসহ অন্যরা সেখানে গেলে নেতা–কর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। এ ঘটনায় ৫১ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয় ২০ জনকে। এর মধ্যে চারজন পুলিশ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করে রাষ্ট্রপক্ষ। মামলার রায়ে আদালত ১৩ জনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন।
অপরাধীর পরিচয়কে হাইলাইট করার সুযোগ আছে কিনা বা দ্রুত বিচার নিয়ে প্রশ্ন তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে আইনজীবী ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘সংবিধানোর ৩৫ এর ৩ ধারায় বলা আছে, ফৌজদারী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচারলাভের অধিকারী হবেন। সেক্ষেত্রে বিচার সম্পন্ন হওয়াটাই কাঙ্ক্ষিত। তারা কোন রাজনৈতিক দলের সেটা আদালতের বিবেচনায় আসার কারণ নেই। যে অপরাধ করেছে তার ভিত্তিতে বিচার হয়ে থাকে, তার সামাজিক, পেশাগত বা অন্য কোনো পরিচয়ের ভিত্তিতে নয়।’