দৈ. কি.ডেস্ক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব তাদের কাজগুলো শেষ করে নির্বাচনের দিকে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের কাজ করছে। তাদের সময় ও সুযোগ দেয়ার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগামী ১৪ ও ১৫ই সেপ্টেম্বরের কর্মসূচি নিয়ে বিএনপি’র অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে যৌথ সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে যেসব সংস্কারের কথা বলেছেন এবং যাদের দায়িত্ব দিয়েছেন- এই সংস্কারগুলো যেন অতি দ্রুত হয়, সে বিষয়ে তাগিদ দেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বুধবার প্রধান উপদেষ্টা বক্তৃতা দিয়েছেন জাতির উদ্দেশ্যে। তিনি কতকগুলো বিষয়ে সংস্কারের কথা বলেছেন। সংস্কারের দায়িত্ব যাদের দিয়েছেন, তাদের নাম বলেছেন। তিনি মোটাদাগে তার সরকারের ভিশন তুলে ধরেছেন।
এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সবাই আমরা সংস্কারের কথা বলছি এবং সংস্কার যে প্রয়োজন- সেটা বলেছি। সেক্ষেত্রে অতি দ্রুত যেন এই সংস্কারগুলো করা হয়। মূল যে বিষয়টা, গণতন্ত্রের জন্য জনগণের প্রতিনিধিদের যে শাসন, জনগণের নির্বাচিত সংসদ দিয়ে দেশ পরিচালনা, সে বিষয় যেন দ্রুততার সঙ্গে হয়, সেটি আমাদের প্রত্যাশা থাকবে।
অন্তর্বর্তী সরকার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে একটি কথা খুব স্পষ্টভাবে বলা দরকার, গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্র হচ্ছে একমাত্র ব্যবস্থা, যা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে। সেজন্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তৈরি করা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কিন্তু সেই কাজটায় জনগণের অংশীদারিত্ব থাকতে হবে। জনগণ কী চায়, সে বিষয়টা থাকতে হবে। আশা করি, সরকার উপলব্ধি করবে এবং যাদের সংস্কারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তারা অত্যন্ত সুচারুরূপে পালন করবেন।
শিল্পকারখানায় অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য পরিকল্পিতভাবে চক্রান্ত হচ্ছে- মন্তব্য করে তিনি বলেন, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার জন্য একটা চক্র কাজ করছে। পতিত ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা ভারতে বসে সেখান থেকে অপপ্রচার চালাচ্ছেন বাংলাদেশ সম্পর্কে, দেশের মানুষ সম্পর্কে। এই অপপ্রচারগুলো কখনো গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আর শিল্পক্ষেত্রে একটা অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী ১৪ই সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই সমাবেশে গত ১৪ থেকে ১৫ বছরে যারা শহীদ হয়েছেন, পঙ্গু অথবা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে এই সমাবেশ হবে। এতে সংগীত, কবিতা পাঠ, আবৃত্তিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হবে। পরদিন ১৫ই সেপ্টেম্বর গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করবে বিএনপি।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির, হাবিব-উন-নবী খান, শহীদ উদ্দিন চৌধুরীসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।