নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা চতুর্থ দফার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। কোথাও কোথাও তৈরি হয়েছে যানজটও। এদিকে অবরোধ উপেক্ষা করে স্কুলগুলোতে শুরু হয়েছে বার্ষিক পরীক্ষা। প্রতিটি স্কুলেই ছিল শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।
সোমবার সকালে রাজধানীর নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, আসাদগেট ও মহাখালী এলাকার প্রতিটি রাস্তায় ছিল যানবাহনে ভিড়। এসব এলাকার অধিকাংশ বাস স্টপেজগুলোতেই যাত্রীরা সকাল থেকে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঢাকা জেলার ভেতরে ও বাইরে চলাচল করা স্বল্প দূরত্বের মিনি বাসগুলো ছিল যাত্রীতে ঠাসা। পাশাপাশি বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ায় স্কুলগুলোর সামনে ছিল শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ভিড়।
রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের সামনে কথা হয় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর অভিভাবক সাইফুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, অবরোধের নামে কতোদিন ঘরে থাকবে মানুষ। সাধারণ জনগণ রাজনীতির নামে সহিংস কর্মসূচি চায় না। কিছুটা আতঙ্ক থাকলেও মানুষ ঘর থেকে বের হওয়া শুরু করেছে। তাছাড়া ছেলে মেয়েদের লেখাপড়াও জরুরি। স্কুলে যথাসময়ে বার্ষিক পরীক্ষাও শুরু হয়েছে।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রের অভিভাবক আকবার হোসেন বলেন, ‘ভয় দেখিয়ে জনগণকে ঘরে বন্দি রাখা যায় না, রাজনৈতিক দলের নেতাদের এটা বোঝা উচিত। আন্দোলনের প্রতি জনসমর্থন থাকলে কেউ বাইরে বের হতো না। সবার আগে মানুষের কথা ভাবা উচিত। আমরা চাই ১৫ বছর যেভাবে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল, সেটিই যেন থাকে।’
ফার্মগেট এলাকার বাস চালক মো. মামুন বলেন, ‘বাস পুড়ানোর ঘটনায় কিছুটা আতঙ্ক আছে। তবে পরিবারের জন্য আয়ও করতে হবে, তাছাড়া আমরা খাবো কি? রাস্তায় যাত্রী আছে। তাই গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। আশাকরি সরকার আমাদের নিরাপত্তা দিবে।’
আমিনুল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, ‘বেলা বাড়ার সাথে সাথে মানুষের চাপও বাড়ে। তখন বাসে উঠতে আরও কষ্ট হয়। সেজন্য আমি প্রতিদিন একটু সকালেই বাইরে বের হই। এ সময় রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকে ফলে পৌঁছানো যায় দ্রুত। অবরোধের প্রভাব তেমন একটা নেই।’
মহাখালীর আমতলী বাসস্ট্যান্ডে রাবেয়া বসরী নামের এক যাত্রী বলেন, ‘রাস্তার হালচাল কিছু বুঝি না। হঠাৎ দেখি গাড়ির পরিমাণ বেশি। আবার দেখি নেই। এখানে অনেকক্ষণ ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। কোনো বাসে উঠতে পারছি না। সবগুলো বাসের গেট পর্যন্ত একেবারে ঠাসা।’
মতিঝিল এলাকার বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আদিলুর রহমান বলেন, ‘অবরোধ চলছে। কিন্তু কেউ তা মানছে না। মিরপুর থেকে মেট্রো ট্রেনে মতিঝিল এসে অফিস করছি। কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’
সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপি-জামায়াতের ৪র্থ দফার ৪৮ ঘণ্টার এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয় রোববার ভোর ৬টা থেকে। গত বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।