দৈ. কি.ডেস্ক : কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে লিজ নেওয়া জলমহাল দখল চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (আওয়ামী লীগ সমর্থক) এবং বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলা হয়েছে।
গতকাল দুপুরে জেলা শহরের শেরাটন হোটেলের হলরুমে ভাটিনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি রাম চরণ দাস ও তাঁর স্ত্রী অনিতা রাণী দাস সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগী রাম চরণ দাস ভাটিনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
লিখিত বক্তব্যে রাম চরণ দাস বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে স্মারক নম্বর: ৩১.৪১.৪৮০০.০০৭.৩৪.০০৮.১২-১৬৪৫ মূলে গত ২৪ জুন অষ্টগ্রামের ১ নম্বর চরদেওঘর ফিশারিজ আমার স্ত্রী অনিতা রানী দাশের নামে এক বছরের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত ৩০ জুলাই উপজেলা সদরের পুরোনো আদালত ভবনের কাছে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাক আহম্মেদ কমলসহ ছয়-সাতজন মিলে স্ত্রীসহ আমার পথরোধ করে সঙ্গে থাকা সোনালী ব্যাংকের চেক বইয়ের পাঁচ-ছয়টি পাতায় স্বাক্ষর নেন। সেই সঙ্গে আলাদা দুটি স্ট্যাম্পে স্ত্রী ও আমার স্বাক্ষর নেওয়া হয়। চলে যাওয়ার সময় তাঁরা আমার স্ত্রীর নামে বরাদ্দ জলমহাল লিখে নেবেন জানিয়ে জলমহালে আর না যাওয়ার হুমকি দেন।’
রাম চরণ দাস বলেন, ‘এ বিষয়ে সমাধান চেয়ে গত শনিবার ইউএনও কার্যালয়ে যাই। কিন্তু ইউএনও কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি। সেখান থেকে ফেরার সময় বেলা আড়াইটার দিকে অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাক আহম্মেদ কমল এবং বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জন উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ের নিচতলায় আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা কিল-ঘুষি মারতে মারতে আমাকে ইউএনও কার্যালয়ের একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাঁরা আমাকে ফিশারিজ তাদের দিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। বলা হয়, তাঁদের কথা না শুনলে আমাদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করবে। এ সময় ইউএনও তাঁদের পক্ষে কথা বলেন। পরদিন অষ্টগ্রাম থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানালেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ অবস্থায় আমি ও আমার স্ত্রীর জীবনের নিরাপত্তা চাচ্ছি এবং অন্যায়ের প্রতিকার কামনা করছি।’
অভিযোগের বিষয়ে সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাক আহম্মেদ কমল (আওয়ামী লীগ সমর্থক) বলেন, ‘রাম চরণ দাসের সঙ্গে আমাদের স্ট্যাম্পে চুক্তি রয়েছে। আমাদের ১ কোটি টাকার শেয়ার আছে। ইউএনও অফিসে আমরা কোনো ধরনের ঘটনা ঘটাইনি। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
অভিযোগের বিষয়ে বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘কেউ তাকে উসকিয়ে দিচ্ছে। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। সে যা বলছে তা পুরোটাই মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. দিলসাদ জাহান বলেন, ‘এগুলো মিথ্যা কথা। আমার সামনে কোনো কিছুই ঘটেনি।’
অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) মোশাররফ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।’