বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে কোনো না কোন দিবস থাকেই। আর এই দিবসগুলো জাতিসংঘের সদন অনুযায়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এসব দিবস বিভিন্ন দেশে পালিত হয়।আজ ১১ মার্চ, ‘নাক পরিষ্কার করা দিবস’ বা ‘ওয়াশ ইওর নোজ ডে’। ক্লিয়ার নামক যুক্তরাষ্ট্রের একটি নাক ও মুখের যত্নের পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ২০২১ সালে দিবসটি পালন শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
নাক শরীরের একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের মৌলিক কাজটিই করে থাকে নাক বা নাসারন্ধ্র। নাক দিয়ে ঘ্রাণ নিয়ে মানুষ বিবেচনা করে কোনটি গ্রহণ বা বর্জন বাঞ্ছনীয়। নাকের গড়ন বা আকৃতি মানুষের মুখশ্রীকেও অনেক বাড়িয়ে তোলে। এমনকি মানুষের কণ্ঠস্বরেরও একটা প্রভাব থাকে নাকে।
শরীরের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটির যত্নও নেওয়া উচিত গুরুত্বের সঙ্গে। অনেকেই নাকের যত্নের ব্যাপারে বেশ উদাসীন। মানুষ হাত, পা, মুখ, ত্বক, চুল এমনকি কণ্ঠস্বরেরও যত্ন নেয়। কিন্তু নাকের ব্যাপারে তেমন কোনো খেয়াল থাকে না। অথচ নাকের অযত্নের কারণে শরীরে মারাত্মক সব রোগ দানা বাঁধতে পারে। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসসহ অসংখ্য রকমের স্বাস্থ্যহানিকর ময়লা নাকে প্রতিদিন জমে থাকে। এসব ময়লা বড় ধরনের অসুখের কারণ। নাক দিয়ে পানি পড়া, নাক বন্ধ, নাক ডাকা, নাক চুলকানো, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, হাঁচি-কাশি—কত সমস্যা। যাদের নাকের জটিলতা আছে, কেবল তারাই বোঝেন এসব কষ্ট।
দিবসটি উপলক্ষে নাকের যত্নে কিছু টিপস দেখে নেওয়া যাক
কুসুম গরম পানির ভাপ নিয়ে নাক পরিষ্কার করতে পারেন। গরম পানিতে মেনথলের দানা মিশিয়ে চোখ বন্ধ করে ভেপার বা ইনহেলেশন নাক দিয়ে টেনে নিন। এতে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস নাক থেকে সহজেই দূর হবে। এ অসুখে সাধারণত অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খুব কার্যকর এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে বাজারে চলতি নাকের ড্রপে সাময়িক আরাম মিললেও দীর্ঘদিন ব্যবহারে ঘ্রাণশক্তি কমে যেতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অযথা নাকের ড্রপ, টানা ব্যবহার করবেন না। সমস্যা বাড়লে নাক-কান-গলা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
দুধে এক চিমটি খাবার সোডা মিশিয়ে নিতে হবে। এর মধ্যে তুলা ভিজিয়ে নাকের ওপর আলতো করে মুছে নিতে হবে। এতে নাকের উপরে জমে থাকা ধুলো পরিষ্কার হবে।
১০০ গ্রাম গোলাপজলে ১ চা-চামচ কর্পুর মিশিয়ে রেখে দিন। দিনে দুই থেতে তিনবার তুলোয় এই গোলাপ পানির মিশ্রণ দিয়ে পরিষ্কার করলে ব্ল্যাক হেডস বা হোয়াইট হেডসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
অনেকের নাকের দুই পাশে কালচে ছাপ দেখা যায়। এ থেকে মুক্তি পেতে ১ চামচ মুলতানি মাটি, চার-পাঁচটি লবঙ্গগুঁড়া, গোলাপজলে মিশিয়ে নাকের উপর লাগিয়ে রাখতে হবে। শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন।
নাকের পাশে বা ত্বকের যে কোন জায়গায় হোয়াইট হেডস হলে তা কখনও চাপ দিয়ে বের করার চেষ্টা করবেন না। আতপ চালের গুঁড়ার সঙ্গে মসুর ডাল বাটা লাগালে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নাকের উপর ও চারপাশে দুধ দিয়ে পরিষ্কার করে ক্লিনজিং মাস্ক লাগাতে হবে। দই, ডিম, মধু ও সামান্য পরিমাণ হলুদ একসঙ্গে মিশিয়ে নাকের উপর লাগিয়ে রাখুন। মিনিট দশেক পরে ধুয়ে ফেলুন। ফলে সব সময় নাকের উপর ও চারপাশ পরিষ্কার থাকবে। সহজে কোন ছোপ বা ব্ল্যাক হেডস হবে না।
নাকের ত্বক মসৃণ করতে ১ চামচ মধু, ১০ থেকে ১২ ফোঁটা লেবুর রস, ২ চামচ গাজরের রস ও ১ চামচ বেসন একসঙ্গে মিশিয়ে এই মিশ্রণ লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।