ডেস্ক:সিরিয়ার সীমান্তের কাছে জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা করে তিন মার্কিন সেনাকে হত্যার এক সপ্তাহ পর প্রতিশোধ নিলো যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়া ও ইরাকে থাকা ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) এলিট বাহিনী কুদস ফোর্স এবং তাদের সমর্থিত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর অন্তত সাতটি স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সিরিয়ার চারটি ও ইরাকের তিনটি জায়গায় মোট ৮৫টি লক্ষ্যবস্তুতে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, মাত্র ৩০ মিনিটে সিরিয়া ও ইরাকে এই হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে এসব ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। হামলায় কয়েকটি মার্কিন যুদ্ধবিমান অংশ নেয়। এরমধ্যে ছিল দূরপাল্লার বি১ বোমারু বিমান। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ‘তাদের বিশ্বাস হামলা সফল হয়েছে। তবে এই হামলায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা মূল্যায়ন করা হচ্ছে।’
এদিকে, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে বলেছে, সিরিয়ার মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস ওয়ার মনিটরে জানিয়েছে, সিরিয়ায় চালানো হামলায় অন্তত ‘১৮ ইরানপন্থী যোদ্ধা’ নিহত হয়েছে। তবে কোনো পক্ষ থেকেই এই তথ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন গত সপ্তাহে জর্ডানে নিহত হওয়া সৈন্যদের দেহাবশেষ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেছেন, ‘আমি আমেরিকান বাহিনীর ওপর হামলা সহ্য করবো না। আমরা যুক্তরাষ্ট্র, আমাদের বাহিনী এবং আমাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবো।’
যুক্তরাষ্ট্রের এ হামলাকে গত রোববারের সিরিয়ার সীমান্তের কাছে জর্ডানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। সামরিক ঘাঁটিতে ওই হামলায় তিনজন মার্কিন সেনা নিহত হন এবং আহত হন ৪১ জন। ওই হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত একটি সশস্ত্র গ্রুপকে দায়ী করে আসছিল ওয়াশিংটন।
হামলার জবাবে সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থিত ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় ধারাবাহিকভাবে হামলা চালানোর পরিকল্পনায় অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। কবে থেকে হামলা শুরু করা হবে, তা স্পষ্ট করে না জানালেও একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছিলেন, কয়েকদিন ধরে হামলা চালানো হবে। বিষয়টি আবহাওয়া পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।
ইরাক ও সিরিয়ায় হামলা নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেছেন মার্কিন জেনারেল ডগলাস সিমস। তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে বিমান হামলা চালানো কঠিন ছিল। শুক্রবার পরিস্থিতি বদলে যায়। যেসব লক্ষ্যে আঘাত হানা হয়েছে সেগুলো নিয়ে খুব আত্মবিশ্বাসী তিনি।