কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের প্রয়াগ বিলকে ঘিরে আছে স্রোতস্বিনী ধনু নদী। হাওর অধ্যুষিত প্রয়াগ বিলে এখন বোরো ধান চাষ নিয়ে ব্যস্ত কৃষক। এবার সেখানে অন্তত এক হাজার একর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। একটু জায়গাও পড়ে নেই। সবুজে ছেয়ে গেছে পুরো বিল।
বোরো চাষ নিয়ে এবারের মতো এতটা নির্ভার কখনও ছিল না এখানকার কৃষক। প্রায় প্রতি বছর আগাম বন্যার শিকার হতো তারা। পানিতে তলিয়ে যেত হাজার হাজার মণ ধান। ফসলের নিরাপত্তা না থাকায় অর্ধেকে নেমেছিল বোরো চাষ। পতিত পড়ে থাকতো অনেক জমি।
প্রয়াগ বিলের ফসল রক্ষা বাঁধটি মাটি দিয়ে নির্মিত হওয়ায় ধনু নদীর পানির চাপে প্রায়শই ভেঙে যেতো। কৃষকদের দাবি ছিল একটি টেকসই বাঁধ, যা কখনও ভাঙবে না। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জাইকার (জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা) টাকায় এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর) একটি টেকসই ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে দিয়েছে প্রয়াগ বিলে। কাজও প্রায় শেষ।
স্থানীয়রা বলছেন, জেলাজুড়ে অন্যান্য ফসল রক্ষা বাঁধের মেরামত কাজ শেষ হতে এখনও অনেক সময় লাগবে। তবে তাদের বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে পানি আসার অন্তত তিন মাস আগে। এ কারণে তাদের মাঝে আর ফসল হারানোর ভয় নেই।
নতুনভাবে বাঁধটি নির্মিত হওয়ায় সাগুলি, উত্তর গণেশপুর, দক্ষিণ গণেশপুর, খাকশ্রী ও নিয়ামতপুর গ্রামের হাজারের বেশি কৃষক উপকৃত হবেন।
কিশোরগঞ্জে কর্মরত প্রকল্প সংশ্লিষ্ট জাইকার সোসিওলজিস্ট মো. মারুফ উল আলম দাবি করেন, টেকসই বাঁধ নির্মাণের কারণে এখানকার কৃষকদের ফসলের ঝুঁকি কমেছে। এতে তাদের জীবনমান উন্নত হবে। প্রায় ঝুঁকিমুক্ত ফসলের নিশ্চয়তা পেয়ে কৃষকরা খুশি হয়েছেন। এ ধরনের বাঁধ হাওরের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে।