পৃথিবীতে যত প্রচলিত ব্যায়াম আছে, এর ভেতর সবচেয়ে জনপ্রিয়, আর খুবই উপকারী হলো হাঁটা। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য হাঁটার বিকল্প নেই। নিয়মিত হাঁটার ফলে হৃৎযন্ত্র ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ে, মন ভালো থাকে, মন সতেজ হয়, মেদ কমায়, ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। জেনে নেওয়া যাক, কখন হাঁটবেন, কীভাবে আরেকটু বেশি হাঁটবেন, হাঁটতে গিয়ে যে ভুলগুলো করবেন না—
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য হাঁটার বিকল্প নেই
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য হাঁটার বিকল্প নেইছবি: প্রথম আলো
কখন হাঁটবেন?
সকাল বা সন্ধ্যা—দুই সময়েই হাঁটারই সুফল আছে। আপনার সুবিধা মতো সময়ে আপনি হাঁটবেন। সবচেয়ে ভালো হয়, যদি দুই সময়েই হাঁটতে পারেন।
১. সকালে হাঁটলে সারাটা দিন আপনার ‘এনার্জিটিক’ যাবে। সহজে ক্লান্তি ভর করবে না। সকালের ফ্রেশনেস থেকে তাই নিজেকে বঞ্চিত না করাই ভালো। সকালে যাঁরা হাঁটেন, তাঁদের জন্য পরিষ্কারভাবে চিন্তা করা, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয়।
২. সন্ধ্যায় হাঁটা পরিপাকের জন্য ভালো। ঘুমের জন্য চমৎকার ঔষধ।
আরও পড়ুন
কাঁদলে কী লাভ হয় জানেন?
কীভাবে আরেকটু বেশি হাঁটবেন?
প্রতিদিনের ‘পদক্ষেপ’ বাড়তে, দৈনিন্দিন কর্মকাণ্ডে ছোট ছোট পরিবর্তন আনুন।
১. কাজের ফাঁকে ছোট ছোট বিরতি নিয়ে আপনার কর্মপরিবেশেই হাঁটুন।
২. লিফটে চড়া বাদ দিন। সিঁড়ি ব্যবহার করুন। পাঁচতলার পর্যন্ত সিঁড়ি দিয়েই ওঠানামা করুন। বিশেষ করে নিচে নামার ক্ষেত্রে আপনি লিফটকে ‘টা টা’ দিতেই পারেন।
৩. আর আপনার নির্ধারিত জায়গা থেকে একটু দূরে গাড়ি পার্ক করুন।
৪. প্রতিদিন আপনার স্টেপের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। স্মার্টফোনের অ্যাপের মাধ্যমে কাউন্ট করুন। মোট লক্ষ্যকে সকাল; দুপুর–বিকেল; সন্ধ্যা–রাত—এ রকম তিন ভাগে ভাগ করুন। মিলিয়ে দেখুন, সকাল পেরিয়ে যাওয়ার পর লক্ষ্যের এক–তৃতীয়াংশ অর্জন করতে পেরেছেন কি না।
৫. কাছের দূরত্বগুলোতে যানবাহন পরিত্যাগ করুন।
৬. হাঁটার জন্যও বন্ধু বেছে নিন। দুজনে মিলে হাঁটুন। তাতে একজন আরেকজনকে নিয়মিত হাঁটতে অনুপ্রাণিত করতে পারেন।
৭. হাঁটার জন্য আরামদায়ক জুতা কিনুন।
৮. কোনো আলোচনা বা মিটিং হাঁটতে হাঁটতেও সেরে ফেলা যায়।
হাঁটতে গিয়ে যে ভুলগুলো করবেন না
১. আস্তে আস্তে হাঁটবেন না। জবুথবু হয়েও না। শরীর সোজা রেখে দ্রুত হাঁটুন।
২. পায়ে ব্যথা লাগে বা অস্বস্তি হয়, এমন কিছু হাঁটার সময় পরবেন না। এতে পা ছিলে যেতে পারে, ফুলে যেতে পারে। এমনকি পড়ে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহতও হতে পারেন। ভেঙেও যেতে পারে পা বা পায়ের গোড়ালি। হিলজাতীয় কিছু পরবেন না। হাঁটার জন্য কিনতে পারেন আরামদায়ক কেডস।
৩. হাঁটার সময় লম্বা লম্বা স্টেপ ফেলা থেকে বিরত থাকুন। পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
৪. হাঁটার সময় ঘাম বের হয়ে শরীর সহজেই পানিশূন্য হয়ে পড়ে। তাই এক বোতল পানি সঙ্গে রাখুন। পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
৫. হাঁটতে বের হয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে কথা বলবেন না বা গান শুনবেন না। মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বাসায় ট্রেডমিলে হাঁটার সময় বা জিমে ব্যায়াম করার সময় গান শুনতে পারেন।