দৈ. কি.ডেস্ক : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে মাদকের আখড়ায় পুলিশের অভিযানে পালাতে গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক ইয়াছিন মিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের চরঝাকালিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়াছিন মিয়া পার্শ্ববর্তী নরসিংদী সদরের বীরপুর এলাকার আবু ছায়েদ এর ছেলে। তিনি কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন।
জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যার পর এস আই কামালের নেতৃত্বে মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত মাদক স¤্রাট লিটনের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ইয়াছিনসহ আরো অনেক লোকছিল লিটনের বাড়িতে। অভিযানের বিষয় টের পেয়ে সবাই দৌড়ে পালিয়ে যায়। ইয়াছিন পালাতে গিয়ে মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারায়। এ সময় তাকে দ্রæত হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
নিহতের স্ত্রী আমেনা খাতুন বলেন, আমার স্বামীর পরিচিত অন্য একজন সিএনজি চালক আমার বাড়িতে এসে স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ দেয়। আমি তার সাথে হাসপাতালে ছুটে আসি। সেখানে আমার স্বামীর লাশ দেখতে পাই। কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে? আমি কিছুই জানি না। স্বামী মাদক বিক্রি বা সেবন করতো কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদকের সাথে জড়িত ছিল না। তিনি অসুস্থও ছিলেন না। ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে স্বামীর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন ও এর বিচার দাবী করছি।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক জুয়েল মিয়া জানান, চারজন পুলিশ চরঝাকালিয়া যাওয়ার জন্য আমার গাড়ীতে উঠে। সেখানে লিটনের বাড়ি সংলগ্ন রাস্তায় আমাকে একটু অপেক্ষা করতে বলে। আমি অপেক্ষা করছি। একটু পরেই একজন অসুস্থ লোককে আমার গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমি হাসপাতালে রেখে চলে যাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ঈশা খান জানান, ইয়াছিন মিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে আমরা মৃত অবস্থায় পাই।
জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিকুল আলম জানান, লিটন এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। বহুবার জেলও খেটেছে। কিন্তু জামিনে এসে আবারো মাদক ব্যবসা করে। মাদক পাচারে তার অনেক সহকারী আছে। ইয়াছিন তাদের একজন হতে পারে। লিটনের কারণে এলাকার যুব সমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাকড়শার জালের মত এলাকায় মাদকের বিস্তার ঘটছে। তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশের কাছে গোপন সংবাদ ছিল মাদক ব্যবসায়ী লিটন মাদকের একটি বড় চালান এনেছেন। পুলিশ লিটনের বাড়িতে অভিযানে গেলে বাড়িতে থাকা সবাই দৌড়ে পালিয়ে গেলেও ইয়াসিন মিয়া পালানোর সময় মাটিতে পরে যায়। সে তখন বুকে ব্যাথা হচ্ছে বলে জানায়। তাকে দ্রæত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে, একজন ম্যাজিস্ট্র্যাটের উপস্থিতিতে মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
