দৈ. কি.ডেস্ক : কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে স্বামী মাহবুবুর রহমানকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন কিশোরগঞ্জের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালতের বিচারক শামীম হাসনাত পারভিন এ রায় দেন। রায়ে দুজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশও দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রোকসানা আক্তার (৩৩) ভৈরব উপজেলার চণ্ডিবের উত্তরপাড়া গ্রামের মো. শহিদ মিয়ার মেয়ে। আর আসিফ আহমেদ (২৬) একই গ্রামের বাবুল আহম্মেদের ছেলে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, বিয়ের পর মাহবুবুর রহমান তাঁর স্ত্রী রোকসানাকে নিয়ে ভৈরবের চণ্ডিবের উত্তরপাড়ায় নিজস্ব বাসায় থাকতেন। এই দম্পতির তিন সন্তান আছে। এর মধ্যে দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে। মাহবুব রেলের কর্মচারী ছিলেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল ঢাকার কমলাপুর।
সাপ্তাহিক ছুটিতে তিনি বাড়িতে যেতেন। এর মধ্যে রোকসানা একই গ্রামের আসিফ আহম্মেদের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তারা দুজনে মিলে মাহবুবকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর রাতে রোকসানা তাঁর স্বামীকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেন। পরে আসিফ আহমেদ ধারালো ছুরি দিয়ে বুকে আঘাত করে হত্যা করে মাহবুবকে। এরপর রটিয়ে দেওয়া হয় যে ডাকাতেরা ঘরে ঢুকে মাহবুবকে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই হাবিবুর রহমান অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে ২৮ নভেম্বর ভৈরব থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে প্রথমে রোকসানা ও পরে আসিফকে গ্রেপ্তার করলে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তারা। এরপর তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দেন। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৩০ জুন তদন্ত কর্মকর্তা ভৈরব থানার ওসি মো. শাহিন তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি সিনিয়র আইনজীবী রাখাল চন্দ্র দাস এবং আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অশোক সরকার। মামলায় মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এপিপি আইনজীবী রাখাল চন্দ্র দাস ও মামলার বাদী নিহতের বড় ভাই মো. হাবিবুর রহমান।