ডেস্ক: কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কে যাত্রী-চালকদের পোহাতে হচ্ছে ব্যাপক ভোগান্তি। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকেই, আহত হয়ে হাত-পা হারিয়ে পঙ্গু হচ্ছেন কেউ কেউ।
সরেজমিনে দেখা যায়, কটিয়াদী পৌর সদরের কামারকোনা এলাকা থেকে শুরু করে পার্শ্ববর্তী উপজেলা বাজিতপুরের পিরিজপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে যাতায়াতে সৃষ্টি হয় বিঘ্নতা। গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় লেগে থাকে ছোট-বড় জ্যাম। যাত্রীদের পড়তে হয় দীর্ঘ সময়ের ভোগান্তিতে।
চলাচলে নেমে এসেছে স্থবিরতা। গন্তব্যে পৌঁছাতে ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত সময়। সেই সময়ের ঘাটতি মেটাতে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে প্রায়শই ঘটে যাচ্ছে দুর্ঘটনা। এ ছাড়াও সড়কে ছোট-বড় গর্তের ফলে প্রায়ই মালবাহী ট্রাক উল্টে রাস্তায় কিংবা খাদে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয় লোকজন বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে চলাচল করার সময় ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অনেক সময় যানবাহন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। নষ্ট হচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রাংশ ও বহন করা মালামাল। এ ছাড়া সড়কটির এ নাজুক পরিস্থিতির কারণে শুষ্ক মৌসুমে ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে। বৃষ্টিতে সেই ধুলা পরিণত হয় কাদায়। তখন ভোগান্তি চরমে পৌঁছায়। তাই সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি সবার।
ময়মনসিংহের বিভিন্ন অঞ্চল, কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় যেতে হয় এ আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে। এ সড়ক দিয়ে সব সময় শত শত ট্রাক, বাস, তেলবাহী লরি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয় ২০২০ সালের শেষের দিকে। দুই বছর না যেতেই গড়হিসাবি কাজের ফলে কার্পেটিং উঠে রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। সড়কের বেশকিছু স্থান দেবে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।
সড়কে যাতায়াতকারী চালকেরা জানান, কিশোরগঞ্জ-ভৈরব এই আঞ্চলিক সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় পার্শ্ববর্তী সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মালামাল ও যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত হয় সড়কটি। দীর্ঘদিন যাবৎ বেহাল দশার ফলে তাদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। এসব ছোট-বড় গর্ত দিয়ে গাড়ি চালানোর ফলে প্রায়ই মালবাহী গাড়ি উল্টে যায়।
কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের শেষের দিকে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কটি ১৮ থেকে ৩০ ফুটে প্রশস্তকরণ করা হয়। প্রায় ৬০ ফুট সংস্কারকাজে ব্যয় হয় ১৮৮ কোটি টাকা। সওজ কিশোরগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী রিতেশ বড়ুয়া জনদুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কটি ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাত কিলোমিটার সংস্কারকাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তবে এখনো কার্যাদেশ পাওয়া যায়নি। কার্যাদেশ পেলে সংস্কারকাজ শুরু হবে।