দৈ. কি.ডেস্ক : কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আমান উল্লাহ নামে এক কলেজ ছাত্রের পায়ের রগ কাটার অভিযোগে মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর আহত কলেজ ছাত্র বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাজরা বাসস্ট্যান্ড এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি রাসেল ও কুলসুম দম্পতির মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ওই ছাত্রকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তার বাম পায়ের গোড়ালির রগ কেটে দেয়। এ সময় সফল মিয়া ও ইমন মিয়া নামে আরও দুই ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করে তারা। আহত আমান উল্লাহ কুলিয়ারচর সরকারি কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র।
জানা যায়, এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে গত ৯ নভেম্বর শনিবার এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি রাসেল ও কুলসুম দম্পতিকে মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানান, অন্যথায় এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য তিনদিনের আল্টিমেটাম দেয় তারা। এতে মাদক কারবারি রাসেল ও কুলসুম দম্পতি ক্ষিপ্ত হয়ে সুযোগ খুজতে থাকে।
গত ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি রাসেল দম্পতির খোঁজখবর নেয়ার জন্য তাদের বাড়িতে যায়। কিন্তু ছাত্ররা বাড়ির সীমানায় প্রবেশের পরপরই রাসেল-কুলসুম দম্পতি এবং তাদের সহযোগী আরও কয়েকজন ছাত্রদের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে তারা দেশীয় অস্ত্র দা, রড, লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্রদের ধাওয়া করে। এতে ছাত্ররা পালাতে গেলে আমান উল্লাহ রাস্তায় পড়ে যায়। তখন মাদক ব্যবসায়ী রাসেল আমান উল্লাহকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে এবং আমান উল্লাহর বাম পায়ের গোড়ালির মূল রগ কেটে দেয়। স্থানীয়রাসহ স্বজনরা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। সে বর্তমানে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় গত ১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার আমান উল্লাহ বাদী হয়ে রাসেল-কুলসুম দম্পতিসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তমাল কান্তি মল্লিক আমান উল্লাহর পায়ের রগ কাটার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, রাসেল-কুলসুম দম্পতি প্রকাশ্যেই দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রি করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে এবং একাধিক বার গ্রেপ্তার হয়ে কারাবাস করেছে। সম্প্রতি এলাকাবাসী তাদের মাদক ব্যবসা বন্ধ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে অনুরোধ করেন, অন্যথায় এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলা হয় তাদের। এর আগে তাদের মাদক ব্যবসা বন্ধ করার পক্ষে এলাকার পাঁচ শতাধিক মানুষ গণস্বাক্ষর করে প্রশাসনের নিকট বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হেলাল উদ্দিন পিপিএম বলেন, কলেজ ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।