ঢাকা২৭ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  1. ! Без рубрики
  2. Echt Geld Casino
  3. test2
  4. অপরাধ
  5. অর্থনীতি
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আরো
  8. এক্সক্লুসিভ
  9. খেলাধুলা
  10. জাতীয়
  11. তথ্য প্রযুক্তি
  12. দেশজুড়ে
  13. প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  14. বাণিজ্য
  15. বিনোদন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গণতন্ত্র বনাম আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি

admin
নভেম্বর ২৯, ২০২৩ ৭:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রফেসর ড. মো. রাশেদুল ইসলাম

 

গণতন্ত্র বলতে বোঝায় জনগণের শাসন ব্যবস্থা। গণতন্ত্র বা Democracy শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘Demos এবং Kratia’ শব্দদ্বয় থেকে উদ্ভূত হয়েছে। Demos শব্দের অর্থ জনগণ এবং Kratia শব্দের অর্থ শাসন বা ক্ষমতা। সুতরাং শব্দগত বা উৎপত্তিগত অর্থে গণতন্ত্র হচ্ছে জনগণের শাসন বা ক্ষমতা। সাধারণভাবে গণতন্ত্র হচ্ছে এমন এক ধরনের সরকার ব্যবস্থা যেখানে শাসন ক্ষমতা রাষ্ট্রের জনগণের হাতে ন্যস্ত থাকে। লর্ড ব্রাইস (Lord Bryce) তাঁর ‘মডার্ন ডেমোক্র্যাসি’ গ্রন্থে গণতন্ত্র সম্পর্কে বলেন, ‘গণতন্ত্র হল এমন এক ধরণের সরকার যাতে রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা আইনগতভাবে কোন বিশেষ শ্রেণি বা শ্রেণি মানুষের হাতে না থেকে, থাকে সমাজের নাগরিকদের হাতে’।

 

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান থেকে সার্বভৌমত্ব অর্জন করে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারত বিভাজনের পর বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ববঙ্গ) পাকিস্তানের একটি প্রদেশে পরিণত হয়েছিল। প্রারম্ভিক যুগের পাকিস্তানে মুসলিম লীগের আধিপত্যের রাজনীতি দেশে উদার গণতন্ত্র আনতে ব্যর্থ হয়েছিলো। ১৯৫৪ সালের পূর্ববঙ্গ আইনসভা নির্বাচনের পর আওয়ামী মুসলিম লীগ পূর্ব পাকিস্তানে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করে। ১৯৫৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব পাকিস্তানি সরকারকে বরখাস্ত করে। পরবর্তীতে ১৯৫৮ সালের পাকিস্তানি অভ্যুত্থান; ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন এবং ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের ফলে পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের উত্থান ঘটে। যা ১৯৭১ সালে দেশকে সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামে নিয়ে যায়। ফলে নিজ উৎসে গণতান্ত্রিক কাঠামো নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

আওয়ামী লীগ ১৯৭২ সালের অস্থায়ী সংবিধানে বর্ণিত গণতন্ত্রের সংসদীয় ব্যবস্থার বাস্তবায়ন তত্ত্বাবধান করে। এর পরেই ১৯৭২ সালের সংবিধান গণপরিষদ কর্তৃক ৪ নভেম্বর ১৯৭২ তারিখে উত্তীর্ণ হয়। স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রথম সরকার গঠন করে। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চে সদ্য প্রণীত সংবিধান অনুযায়ী দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। ১৯৭২ সালে শুরু হওয়া গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ১৯৭৫  সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে স্তব্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী প্রায় ১৫ বছর সামরিক শাসনের নিস্পেষণে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক আদর্শ ভূলণ্ঠিত হয়।

 

এই দীর্ঘ সময়ে খন্দকার মোশতাক, জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং সর্বশেষ জেনারেল এইচ এম এরশাদ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন এবং বিভিন্ন পন্থায় বৈধতার সঙ্কট উত্তরণে চেষ্টা করেন। এসব চেষ্টার মধ্যে অন্যতম ছিল নামেমাত্র সাধারণ নির্বাচন ও সংবিধানের সংশোধনী। সামরিক আমলে স্বল্প ভোটার সহিংসতা, ভোট জালিয়াতি সাধারণ অনুশীলনে পরিণত হয়। ১৯৯০ সালে সামরিক শাসনের অবসানের পর বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পুনপ্রবর্তন হয়। এরপর থেকে সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী নিয়মিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

 

১৯৯১ সালের নির্বাচনে জামায়াতের সমর্থনে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে বিএনপি। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মাত্র ৮৮ আসনে জয় পেয়েছিল। একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করলেও মাগুরা ও মিরপুর উপনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি করে বিএনপি। প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবাবধায়ক সরকারের দাবিতে তুমুল আন্দোলন শুরু করে এবং সদস্য সংসদ থেকে পদত্যাগের সিন্ধান্ত নেয়। পদত্যাগপত্রগুলো পরবর্তীতে স্পিকারের কাছে পাঠানো হলে স্পিকার পদত্যাগপত্র গ্রহণে গড়িমসি করেন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সার্বভৌম। কিন্তু বিএনপি সংসদের বিষয় নিয়ে যায় হাইকোর্টে। বিএনপির অনুগত ক্যাডারদের কয়েকজন তখন সর্বোচ্চ আদালতে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।

 

১৯৯৪ সালের ১১ ডিসেম্বর বিচারপতি মনোয়ার সংসদ বর্জনকে অবৈধ ঘোষণা করে এক নজিরবিহীন রায় দিয়ে বিরোধী (আওয়ামী লীগ) সদস্যদের সংসদে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্বের ওপর এটি ছিল সুস্পষ্ট হস্তক্ষেপ। অন্যদিকে বর্তমান সরকারের মেয়াদে বিএনপি ৭ টি আসন পেয়ে সংসদে আসেন। দীর্ঘ চার বছরের বেশি সময় তারা সংসদ সদস্য হিসেবে থাকলেও সংসদ মেয়াদান্তে তারা পদত্যাগ করেন। বিএনপি তাদের মেয়াদে বিরোধীদের পদত্যাগে বাধা দিলেও আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধীদের সংসদ থেকে পদত্যাগে কোন রকমের বাধা প্রদান করেনি। বিএনপি জোর জবরদস্তি করে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহারের মাধ্যমে তা বিতর্কিত ও কলঙ্কিত করেছিল। তাদের সেসব অপতৎপরতা বিচার-বিশ্লেষণ করেই মহামান্য আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে।

 

বিএনপির অনৈতিক কার্যক্রমের জন্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধান থেকে বাতিল হয়েছে। এখন আবারো তারা নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য জ্বালাও পোড়াওয়ের রাজনীতি শুরু করেছে। তাদের এ দ্বিমুখী আচরণের কারণে এদেশের মানুষ আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরত চায় না। তাছাড়া বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

গণতন্ত্র জনমতের ভিত্তিতে পরিচালিত একটি শাসনব্যবস্থা। তবে গণতন্ত্রের সফলতা কিছু শর্তের উপর নির্ভরশীল। আবার গণতন্ত্রের কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। গণতন্ত্রের সফলতা রাজনৈতিক সংস্কৃতির উপর নির্ভরশীল। গণতন্ত্রের সফলতার জন্য যেমন সুযোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দলের সক্রিয় উপস্থিতি প্রয়োজন, একইভাবে দক্ষ নেতৃত্ব তৈরি এবং রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি পরিচালনার জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশেরও প্রয়োজন।

 

গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে রাজনৈতিক দল। গণতন্ত্র সুসংহতকরণে এটি অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। রাজনৈতিক দলের মূল লক্ষ্য গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকার গঠন করা। জনগণের মাঝে রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি করা এবং কোন বিষয়ের পক্ষে-বিপক্ষে জনমত গঠন করা রাজনৈতিক দলের কাজ। জনগণের প্রতিনিধিত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল সরকার গঠন করে এবং শাসন পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে।

 

সংসদীয় গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দল বিকল্প সরকার ও ছায়া মন্ত্রিসভা হিসেবে ভূমিকা পালন করে। রাজনৈতিক দল তাদের কার্যাবলির মাধ্যমে সুযোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। রাজনৈতিক দলের সক্রিয় উপস্থিতির উপর গণতন্ত্রের সফলতা নির্ভর করে। রাজনৈতিক দল সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করে। এই গণতন্ত্র এবং রাজনৈতিক দলের সাথে যে বিষয়টি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত সেটি হল নির্বাচন। অবাধ, নিরপেক্ষ ও নিয়মিত নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্রের সুফল কখনো সাধারণ মানুষের দোরগোঁড়ায় পৌঁছায় না।

 

গণগতন্ত্রের সুফল যাতে সাধারণ মানুষের দোর গোড়ায় পৌছায় সে কারণে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে এবং অবাধ, সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্নের জন্য সার্বিক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পাঁচজন কমিশনার নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। দেশের সকল নির্বাচন অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব এই নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশনের যাবতীয় কার্যাবলি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান ও আইনানুযায়ী সম্পন্ন হয়। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সময়ানুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। তাই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য যে সময় সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে তা মেনে সকলকে নির্বাচনে আসা উচিত।

 

তবে যারা গণতন্ত্রের নাম করে বিদেশি প্রভুদের সাথে হাত মিলিয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের সে ষড়যন্ত্রের কঠিন জবাব দেয়া উচিত। অতীতে কারও ষড়যন্ত্র যেমন সফলতা পায়নি ভবিষ্যতের কেউ ষড়যন্ত্র করে সফলতা পাবে না। কারণ এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার এবং সুদীর্ঘ সময় সংগ্রামকারী দল হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই আজ স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও প্রগতি প্রতিষ্ঠিত।

 

লেখক: চেয়ারম্যান, জেনেটিক্স এন্ড এনিম্যাল ব্রিডিং বিভাগ, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।