দৈ. কি.ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের পাশ্ববর্তী পলাশী বাজারে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দোকানিদের গণপিটুনির পর গ্রেফতার হয়েছেন হলটির সাবেক (বহিষ্কৃত) ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান।
রবিবার রাত ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। মেহেদী হাসান ও তার এক সহযোগী শহিদুল ইসলাম বর্তমানে চকবাজার থানায় আটক আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাঁদাবাজিতে বাধা দেওয়ায় চাপাতি দিয়ে নজরুল ইসল ও মাহবুবুল হক নামের দুই ব্যবসায়ীকে মারতে গেলে দোকানিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী ও তার সহযোগীকে শহিদুলকে ধরে ফেলে এবং গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাদেরকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে চকবাজার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা যায়, নিয়ম করে প্রায় প্রতিদিন চাঁদাবাজি করতে ওই বাজারে যান সলিমুল্লাহ হল ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা ও তার সহযোগী শহিদুল। এর আগে পলাশী বাজারের কলা বিক্রেতা দেলোয়ার থেকে এক হাজার টাকা এবং কনফেকশনারি দোকানের মালিক সানাউল্লাহ থেকে চাঁদা নেন তারা।
ভুক্তভোগী নজরুল ইসলাম বলেন, চাঁদা চাইতে আসলে আমরা তাকে বাধা দিই। তাতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথম আমাকে ঘুসি মারে এবং পরবর্তীতে চাপাতি নিয়ে আসে। তাদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। নিয়মিত অত্যাচার এবং চাঁদাবাজি করে তারা।
পলাশী দোকান মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক বলেন, রাত ১১টার দিকে এসে এই ছাত্রলীগ নেতা আমাদের দোকানীদের থেকে চাঁদা দাবি করে। তাকে বাধা দিলে সে নজরুল নামে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে এবং চাপাতি দিয়ে কোপাতে যায়। পরে সে পালিয়ে গেলে আমাকে চাপাতি দিয়ে মারতে আসে। আশেপাশে থাকা দোকানিরা আমাকে উদ্ধার করে এবং তাদের ধরে ফেলে। তারপর সবাই মিলে গণপিটুনি দেয়। পরে আমরা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে নিয়ে যায়।
মেহেদীর হলে থাকার প্রসঙ্গে সলিমুল্লা মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন বলেন, সে অবৈধভাবে হলে থাকে। আমরা তাকে আগে চিহ্নিত করতে পারলে আগেই হল থেকে বের করে দিতাম। এখন একজন সাবেক ছাত্রের দায় তো বিশ্ববিদ্যালয় বা হল নেবে না।
উল্লেখ্য, মেহেদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ছিলেন।২০১৪ সালে সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদ থেকে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় ছাত্রলীগ। ২০২১ সালে সলিমুল্লাহ হল থেকে মাদক এবং নারীসহ আটক হন তিনি। সেসময় হল প্রশাসন তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের হাতে তুলে দেয়। এছাড়াও, মদের বারে মারামারির কারণে তাকে অব্যাহতি দেয় ছাত্রলীগ।