অমিত দত্ত
বাংলাদেশ শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনে উজ্জীবিত হয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। শেখ হাসিনা উন্নয়নের নেত্রী। তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন বলে দেশ আজ নিরাপদ। অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ। শুধু পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন নয়, দেশে আজ শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে।
তাছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইটি, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বহু শিল্প-কলকারখানা প্রতিষ্ঠাসহ সকল ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। দেশ আজ অনেক দূর এগিয়েছে। এক সময় দেশকে নিয়ে মানুষ কৌতুক করত, উপহাস করত। ক্ষুধা-দারিদ্র্য জর্জরিত ছিল এদেশের মানুষ। সেই অবস্থা বদলে গেছে। বিশ্বের প্রভাবশালী দেশ ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছেন।
শেখ হাসিনার আন্তরিকতা এবং দেশের মানুষের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আজ মানুষ পেট পুরে ভাত খেতে পায়, উন্নত জীবন-যাপনসহ মৌলিক-মানবিক চাহিদা নিশ্চিত হচ্ছে বলেই জনগণ শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে এবং ভবিষ্যতে থাকবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে দার্শনিক ভিত্তি স্থাপন করেছেন তা শেখ হাসিনার নীতি ও উদ্যোগের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করেছে।
বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের মূল্যবোধে। এই মূল্যবোধগুলি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামোর ভিত্তি তৈরি করে চলেছে, যা শেখ হাসিনার শাসনামলকে নৈতিক ও আদর্শিক কাঠামো প্রদান করেছে।
শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে দেশ আজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করেছে। টেকসই জিডিপি, প্রবৃদ্ধি, শিল্প ও বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য তিনি ইতোমধ্যে দেশে একশটির উপরে ইপিজেড তৈরী করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বেসরকারি খাত উন্নয়নে সরকারের বিনিয়োগমুখী নীতি ও কৌশল গ্রহণের ফলে দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ মানচিত্রে ক্রমেই মোট বিনিয়োগের সঙ্গে প্রতিযোগিতা শুরু করে দিয়েছেন। ফলে এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে দিন দিন বাড়ছে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ ভবিষ্যতে আরো বেশী বৃদ্ধি পাবে।
ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও এই খাত বড় অবদান রাখবে। পাশাপাশি দেশের অগ্র ও পশ্চাৎ সংযোগকারী শিল্পের চাকাও সচল রাখতে সহায়তা করবে।
বঙ্গবন্ধুর প্রগতিশীল আদর্শের চর্চার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন চেয়েছিলেন যা শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থার মূল ভিত্তি।
লিঙ্গ সমতা নীতির মাধ্যমে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার মতো সমস্যাগুলি মোকাবেলা করার মাধ্যমে, বাংলাদেশ আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠনের দিকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।
পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ, বনায়ন কর্মসূচি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার কৌশলের মাধ্যমে পরিবেশগত স্থায়িত্ব, যা জাতির ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য, অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এই প্রচেষ্টাগুলি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সাথে গভীরভাবে গ্রথীত।
ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ মূলত একটি অভিযোজিত প্রযুক্তি-অর্থনৈতিক পরিকল্পনা যা উন্নয়নের ফলাফলের সাথে পানি, ভূমি ব্যবহার, বাস্তুতন্ত্র এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মিথস্ক্রিয়া জড়িত। বাংলাদেশের ভবিষ্যত পানিসম্পদ পরিকল্পনা এরই মাধ্যমে হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুর দর্শনে গভীরভাবে নিহিত গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার বানী। শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থার জন্য একটি পথনির্দেশক নীতি হিসেবে রয়ে গেছে। এই মূল্যবোধগুলিকে সমুন্নত রেখে, সামাজিক সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের জন্য উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ধর্মীয় সহনশীলতা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ তার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করে চলেছে।
সর্বশেষ, শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কালজয়ী আদর্শে বাংলাদেশের একটি সমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত হতে চলেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের সুপারিশ পেয়েছে। ন্যায্য, সত্য ও মানুষের কল্যাণের পক্ষে সোচ্চার দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ বিনির্মাণের যে ভিশন ঘোষণা করেছেন, তাতে শক্তি, সাহস, সক্ষমতা ও প্রেরণা জুগিয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ।
লেখক: প্রভাষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।