ডেস্ক: সাধারণত রোজায় চালের চাহিদা তেমন বাড়ে না। তাতে বাজারও স্থিতিশীল থাকে। কিন্তু এবার রোজার মধ্যেই অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে চালের দাম বেড়ে গেছে। চলতি বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে একবার চালের দাম বেড়েছিল। সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের ফলে তখন দাম কিছুটা কমে আসে। দুই মাসের ব্যবধানে এখন চালের দাম আবার বাড়ল।
কোনো কারণ ছাড়াই দেশের পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে চালের দাম ১ থেকে ২ টাকা করে বেড়েছে। খুচরা বাজারে যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। দিনাজপুর, নাটোর, কুষ্টিয়া, যশোরের বাজারে বেড়েছে চালের দাম।
দিনাজপুর জেলায় প্রতিটি হাট ও বাজারে বেড়েছে চালের দাম। দুদিন আগে প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৫ থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৪৯ টাকায়, চিকন চাল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা দরে, প্রতি কেজি চালের খুচরাতে দাম বেড়েছে ৩ টাকা। পাইকারিতে প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২ টাকা, পাইকারি ৫০ কেজির বস্তার দাম বাড়ানো হয়েছে ১০০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, অটোরাইস মিলাররা সিন্ডিকেট করে বাজারে চালের দাম বাড়িয়েছে। তাদের গোডাউনে পর্যাপ্ত পরিমাণে কম দামে ধান কেনা থাকলেও সে সব ধানের চাল তৈরি করে তারা এখন বেশি দামে বিক্রি করছে, সাধারণ কৃষকদের ঘরের ধান এখন অটো মিলারদের গোডাউনে রয়েছে, যার কারণে নামকে মাত্র ধানের দাম বাড়ার কথা বলে চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
দিন দিন হাস্কিং মিলের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে ছোট মিলাররা বাজারে প্রতিযোগিতা করতে পারছেন না, সব নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে অটোমিলারদের কাছে।
এদিকে, নাটোরে খুচরা বাজারে মোটা ও চিকন সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে প্রায় ২ টাকা। সেই সাথে দেখা দিয়েছে মোটা চালের সংকট। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। হঠাৎ চালের মুল্য বৃদ্ধির কোনো কারণ জানাতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। এখনই চালের মূল্য কমানো প্রয়োজন বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।
এক ক্রেতা জানান, তিনি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। গত দুদিন আগেও মোটা চাল ছিল ৫২ টাকা কেজি। আর আজ সেই একই চাল প্রতি কেজিতে ২ টাকা বৃদ্ধি করে ৫৪ টাকা করা হয়েছে। এর ফলে তারা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে যে চাল কিনেছেন ৫৫ টাকা সেই চাল আজ বিক্রি করা হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৬ টাকা দরে।
যশোরের পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে চালের দাম ১ থেকে ২ টাকা করে বেড়েছে। খুচরা বাজারে যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। যশোরের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা জাতের স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা ও আঠাশ কেজিপ্রতি ৬০ টাকা। এছাড়া বাসমতি ৭৫, মিনিকেট ৬৬ টাকা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি চাল বিক্রেতারা বলছেন, মিল পর্যায়ে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদেরও দাম বৃদ্ধি করতে হয়েছে। এদিকে, হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।