ঢাকা২৭ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  1. ! Без рубрики
  2. Echt Geld Casino
  3. test2
  4. অপরাধ
  5. অর্থনীতি
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আরো
  8. এক্সক্লুসিভ
  9. খেলাধুলা
  10. জাতীয়
  11. তথ্য প্রযুক্তি
  12. দেশজুড়ে
  13. প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  14. বাণিজ্য
  15. বিনোদন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জামায়াত-বিএনপির রাজনৈতিক অপকৌশল

admin
নভেম্বর ৩০, ২০২৩ ৭:০২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মাহমুদুর রহমান

 

নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার গঠন ও আরও বেশ কয়েকটি অযৌক্তিক দাবিতে ২৯ নভেম্বর অবরোধ ও ৩০ নভেম্বর সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে নিবন্ধন হারানো দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম।  ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলাম পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে রাজাকার, আলবদর, আল শামস প্রভৃতি বাহিনী গড়ে তোলে। এরা পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে কাজ করে। পৃথিবীর কোনও দেশে স্বাধীনতার পরে যুদ্ধাপরাধী দলের সেই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ থাকে না। প্রশ্ন হচ্ছে, যে জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিল, স্বাধীনতার ৫২ বছর পর সেই দল এখনো এ দেশে রাজনীতি করছে কী করে? এই সুযোগ কারা করে দিয়েছে?

 

বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে ১৯৭২ সালের সংবিধানের  ৩৮ ধারা অনুযায়ী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। স্বাধীনতার পর গঠিত বাংলাদেশ সরকারের প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল পাঁচটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা। এর মধ্যে জামায়াতও ছিল। বাকি দলগুলো ছিল মুসলিম লীগ, পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি, নেজামে ইসলাম ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়ায় জামায়াতসহ বাকি দলগুলো কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে জামায়াতসহ এসব দলকে আবারও বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দেন।

 

শুধু তাই নয় জিয়াউর রহমান দালাল আইন বাতিল করে সাড়ে ১১ হাজার রাজাকারকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন। ১৯৭৯ সালের ২৭শে মে চার দফা কর্মসূচী নিয়ে জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশে কর্মতৎপরতা শুরু করে। এরপর থেকে জামায়াতে ইসলাম ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমাবেশও করেছে। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময়ও জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক তৎপরতা প্রকাশ্যে ছিল। আন্দোলন সামাল দেবার জন্য জেনারেল এইচএম এরশাদ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনায় বসেন। সে সময় জামায়াতকেও আলোচনার জন্য ডেকেছিলেন জেনারেল এরশাদ।

 

এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি বেশি আসন পেলেও সরকার গঠনের জন্য অন্য দলের সমর্থন দরকার ছিল, আর তাই সমর্থনের বিনিময়ে গোলাম আযমের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে জামায়াতের সঙ্গে তাদের অনানুষ্ঠানিক সমঝোতা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখেছি, যারা এদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল তাদেরকে শুধু ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য বেগম খালেদা জিয়া কীভাবে মন্ত্রিত্ব দিয়ে লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত পতাকা তাদের গাড়িতে তুলে দিয়েছিলেন।

 

সেদিন খালেদা জিয়া আবারও প্রমাণ করেছিলেন বিএনপি-জামায়াত, এই দুটো দলই আইএসআই কানেকশন সুদৃঢ়। এদের রাজনৈতিক দর্শনের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ পাকিস্তানপ্রেম এবং ভারতবিদ্বেষ। জিয়াউর রহমান জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশের সমাজকে দুটি ভাগে বিভক্ত করে গেছেন। এক পক্ষে জাতির পিতার হাতে গড়া দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ, আরেক দিকে বিএনপির নেতৃত্বে স্বাধীনতার বিরোধী পক্ষ।

 

২০০৮ সালের বাংলাদেশে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এরপর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১৯৭১ সালে যারা এদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিলো তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসে। বয়সের কথা বিবেচনা করে গোলাম আযমকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিলে কারাগারেই তার মৃত্যু হয়। ২০১৩ সালে তাদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা কাদের মোল্লা, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসিতে দেশের মানুষ খুশি হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছিল। মতিউর রহমান নিজামীকে বেসামরিক সর্বোচ্চ নেসার-ই পাকিস্তান দেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে, জামায়াত পাকিস্তানের পক্ষের রাজনীতি করে। এ দেশে তাই জামায়াতের রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না।

 

জামায়াত স্বাধীন বাংলাদেশে এক অপরাজনীতি চালু করেছিল। তরুণদের চিন্তা ও চরিত্র ধ্বংস করতে এই রাজনৈতিক দলটিই বেশি দায়ী। তারা ইসলাম ধর্মের অত্যন্ত বিকৃত ব্যাখ্যা পুঁজি করে এ দেশের রাজনীতিতে সন্ত্রাস ও হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা জবরদখলের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়। এরা দেখিয়েছিল প্রতিপক্ষের হাত-পায়ের রগ কেটে বা হাতের কবজি কেটে নেওয়া, কাটা কবজি ছুরির আগায় গেঁথে বিজয় মিছিল করা, জবাই করে মানুষ হত্যা করা, পুলিশের কাছ থেকে রাইফেল কেড়ে নেওয়া, মিলিটারি স্টাইলে ফ্লাইং কিক মারা, বোমা বানানো, গ্রেনেড ছুড়ে শত শত মানুষকে হত্যা ও জখম করা

 

এই জামায়াতই বিএনপির প্রত্যক্ষ মদদে সারাদেশে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটিয়েছিল। সেসময় আমরা দেখেছি, দেশের ৬৫ এলাকায় একই সঙ্গে বোমা ফাটিয়ে জঙ্গিদের উত্থান। ২০১৪ সালে রেলের ফিশপ্লেট খুলে নিয়ে ট্রেন লাইনচ্যুত করে, ট্রেনের বগি পুড়িয়ে, হাজার হাজার গাছ নির্বিচারে ধ্বংস করে, বিভিন্ন অঞ্চলকে দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে, ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল সারাদেশে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে ব্রাশফায়ার করে নরহত্যা কিংবা শিক্ষকদের বাসে বোমাবাজি করে শিক্ষকদের জখম করার মত তাণ্ডবে প্রায় অচল হয়ে গিয়েছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ওই সময় একটি সত্য জাতির কাছে দ্ব্যার্থহীন ভাষায় তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন “জামায়াত-শিবির একটি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী মৌলবাদী সংগঠনের বাংলাদেশি চ্যাপ্টার।” মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুড, ইন্দোনেশিয়ার জামাহ ইসলামিয়া, পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামী, আফগানিস্তানের তালেবান, সৌদি আরব ও আফগানিস্তান থেকে উত্থিত আল-কায়েদা, ইরাক ও সিরিয়ায় ‘ইসলামিক স্টেট’ (আইএস) এবং আফ্রিকার আল-শাবাব ও বোকো হারাম—এগুলোর যে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক, সেটাই জামায়াত-শিবিরেরও অভিন্ন নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশে জেএমবি, হুজি, জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি), আনসারুল্লাহ, হিজবুত তাহরীর, হিজবুত তাওহীদ—এ ধরনের হরেক কিসিমের নাম নিয়ে একেক সময় একেক জঙ্গিগোষ্ঠীর যে তৎপরতা পরিলক্ষিত  হয় এগুলো একই বৃত্তের বিভিন্ন শাখা- প্রশাখা।

 

সেই জামায়াত-শিবির বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে আজও স্বীকার করেনি। পাকিস্তানের ঘাতক সেনাবাহিনীকে সমর্থন দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দলের পূর্বসূরি পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতা-কর্মী-ক্যাডাররা যে গণহত্যা-লুণ্ঠন-ধর্ষণ-অগ্নিসংযোগ-ধর্মান্তরিতকরণের মতো যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল, তার জন্য এখনো তারা দায় স্বীকার বা জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। তাই জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের কোনো বিবেকবান ও দেশপ্রেমিক নাগরিকেরই নিরপেক্ষ থাকার কোনো অবকাশ নেই।

 

বর্তমান নির্বাচনী রাজনৈতিক উত্তপ্ত সময়ে জামায়াতে ইসলাম ও তাদের অঙ্গ সংগঠন আবারও সক্রিয় হয়েছে। পুলিশের অনুমতি ছাড়াই তারা সমাবেশ করেছে, মাঝে মাঝেই ঝটিকা মিছিল বের করছে। প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের গোপন সমঝোতা হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা বিশ্বাস করি, ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এমন একটি বিপজ্জনক আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী দলকে শক্তি সঞ্চয়ের  কোনো ধরনের সুযোগ দেবে না। যেখানে সুযোগ পাওয়া যাবে, সেখানেই স্বাধীনতার স্বপক্ষের সবাইকে নিয়ে যারা মানবতার শত্রু, মনুষ্যত্বের শত্রু তাদেরকে রুখে দেবে।

 

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, পাবলিক হেল্থ অ্যান্ড ইনফরমেট্রিক্স বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।