চলতি বছরে এই জেলায় ৭১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে শর্ষের আবাদ হয়েছে। ২০২২ সালে চাষ হয়েছিল ৩৭ হাজার ৫৪৩ হেক্টর জমিতে। চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় মানিকগঞ্জে তিন বছরে শর্ষের আবাদ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর শর্ষের দাম কম। বাজারে বর্তমানে প্রতি মণ শর্ষে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গতবার ছিল ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, এ বছর মানিকগঞ্জে যে পরিমাণ জমিতে শর্ষের আবাদ হয়েছে, তাতে আশা করা যাচ্ছে, কমপক্ষে ৪ কোটি ৪১ লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ লিটার তেল পাওয়া যাবে, যা এই জেলায় ভোজ্যতেলের মোট চাহিদার চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি।
মানিকগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে বেশি আবাদ করা হয় বারি-১৪ জাতের শর্ষে। এ ছাড়া নতুন জাতের বারি-১৪, বারি-১৭ ও বারি-১৮ জাতের শর্ষের আবাদ করা হয়। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, শর্ষে উৎপাদনে সারা দেশের মধ্যে মানিকগঞ্জ জেলা তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। সিরাজগঞ্জ প্রথম, দ্বিতীয় টাঙ্গাইল। এদিকে মানিকগঞ্জে শর্ষের আবাদ বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিকর তামাকের চাষ কমেছে।
মানিকগঞ্জ জেলা শহরের দুধবাজার এলাকার তেলকলের মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, দিন দিন শর্ষের তেলের চাহিদা বাড়ছে। গত বছর এ সময়ে দিনে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ লিটার শর্ষের তেল বিক্রি হলেও এখন ১৪০ থেকে ১৫০ লিটার তেল বিক্রি হয়ে থাকে। এখন প্রতি লিটার শর্ষের তেল ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, দেশে ভোজ্যতেলের মোট চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশই আমদানি করতে হয়। এ জন্য প্রতিবছর প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। দেশে এখন উন্নত জাতের শর্ষের আবাদ হচ্ছে। এতে ফলনও ভালো হওয়ায় তেলও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দিন দিন শর্ষের তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং দামও মোটামুটি ভালো হওয়ায় কৃষকেরা শর্ষে চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।