দৈ. কি.ডেস্ক :বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে টানা তৃতীয়দিনের মতো সড়ক অবরোধ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও কাপ্তাইসহ এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী লাখো মানুষ। ওই সড়ক দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী থেকে শুরু করে সকল প্রকারের জিনিসপত্র আনা-নেয়া বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে ঘাতক বাসচালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে (চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে) বসে পড়েন শিক্ষার্থীরা। যতোক্ষণ পর্যন্ত তাদের দশ দফা দাবি মেনে নেয়া না হবে, ততক্ষণ এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
সোমবার (২২ এপ্রিল) আনুমানিক বেলা তিনটার দিকে রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে মোটরসাইকেলে ঘুরতে গিয়ে তিন শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দেয় শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাস। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও একই বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী তওফিক হোসেন।
পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শাহ আমানত পরিবহনের চারটি বাস আটক করে তিনটি বাস ভাঙচুর ও একটি বাসে আগুন দেয়। পরদিন মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) তারা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেন। সকাল থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসের সামনের কাপ্তাই সড়কে গাছ ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা সাতটি দফা দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলে জানান।
শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো- পলাতক চালক ও তাঁর সহযোগীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা, নিহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা এবং আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসাধীন সকল খরচ শাহ আমানত বাস কর্তৃপক্ষকে গ্রহণ করতে হবে, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার সাথে ক্যাম্পাসে আধুনিক চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক সরঞ্জামসহ অ্যাম্বুলেন্স–সুবিধা বৃদ্ধি, চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে শাহ আমানত ও এবি ট্রাভেলসসহ সকল লোকাল বাস চলাচল বন্ধ করা, রাস্তার মাথা এলাকা থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত চার লেন মহাসড়ক করা, প্রতিটি বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার কাগজপত্র ও চালকদের লাইসেন্স নিয়মিত যাচাই করা, ছাত্রকল্যাণ পরিষদকে জবাবদিহির আওতায় আনা এবং ছাত্র প্রতিনিধিদল গঠন করা।
এসব দাবি লিখিতভাবে না মানা পর্যন্ত চুয়েটের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম (ক্লাস, পরীক্ষা) স্থগিত থাকবে বলে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। তবে বুধবার সকাল থেকে আবারও কর্মসূচি শুরু হয়। নিজেদের দাবির পক্ষে নানা স্লোগান দিতে থাকেন তারা।