মালয়েশিয়ার প্রোটন ব্র্যান্ডের এসইউভি (স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেলস) গাড়ি দেশেই তৈরি করবে স্থানীয় র্যানকন গ্রুপ। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটি প্রোটনের সঙ্গে এক্সক্লুসিভ পরিবেশক হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে দেশে সংযোজিত প্রোটন ব্র্যান্ডের এসইউভি গাড়ি বাজারে আনবে র্যানকন গ্রুপ।
র্যানকন গ্রুপ সূত্রে জানা যায়, দেশে গাড়ি তৈরির আগপর্যন্ত প্রোটনের এক্স ৯০ সিরিজের এসইউভি গাড়ি আমদানি করে বাজারজাত করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ গাড়ি বাজারজাতকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। এ উপলক্ষে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আজ সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গাজীপুরে অবস্থিত র্যানকন গ্রুপের শিল্পপার্কে প্রোটনের এক্স ৯০ সিরিজের এসইউভি গাড়ি সংযোজন করা হবে। ইতিমধ্যে কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে এ কারখানায় মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার সংযোজন করা হচ্ছে। একই কারখানায় ডিসেম্বর থেকে প্রোটনের এসইউভির সংযোজন শুরু হবে।
গাজীপুরে র্যানকন গ্রুপ যে শিল্পপার্ক গড়ে তুলেছে, সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়ি, মোটরসাইকেল, ট্রাক, টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর সংযোজন ও তৈরি করা হচ্ছে। এ শিল্পপার্কে এরই মধ্যে হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করছে গ্রুপটি।
জানতে চাইলে র্যানকন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোমো রউফ চৌধুরী বলেন, ‘ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ি তৈরির জন্য আমরা এরই মধ্যে আমাদের শিল্পপার্কে ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে নতুন একটি কারখানা স্থাপন করেছি। সেখানে বর্তমানে মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার গাড়ি সংযোজন করা হয়। আগামী ডিসেম্বর থেকে প্রোটনের এক্স ৯০ সিরিজের এসইউভির সংযোজন শুরু হবে।’
বাংলাদেশে প্রথম মালয়েশিয়ার প্রোটন ব্র্যান্ডের গাড়ি সংযোজন শুরু করে পিএইচপি গ্রুপ। তারা কয়েক বছর ধরে দেশে প্রোটন সাগা গাড়ি সংযোজন ও বাজারজাত করে আসছে। এখন প্রথমবারের মতো দেশে প্রোটন ব্র্যান্ডের এসইউভি সংযোজনের উদ্যোগ নিয়েছে র্যানকন গ্রুপ।
দেশে কয়েক বছর ধরে বিশ্বের নামীদামি ব্র্যান্ডের গাড়ির চাহিদা বাড়ছে। এসইউভি অভিজাত গাড়ি হিসেবে পরিচিত। তাই এটিও বাজার পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৩ সালে দেশে এসইউভি শ্রেণির গাড়ি ছিল আমদানি করা মোট গাড়ির ৮ শতাংশ। ২০২২ সালে এসে দেশে যত গাড়ি আমদানি হয়েছে, তার ৪০ শতাংশই ছিল এসইউভি শ্রেণির। ওই বছর ১০ হাজার ৬৪৯টি এসইউভি গাড়ি আমদানি করা হয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নিবন্ধনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে এসইউভি গাড়ি নিবন্ধন হয়েছে ১০ হাজার ২৪০টি, যা ২০২১ সালের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি।
তবে মার্কিন ডলারের সংকটের কারণে গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়াকড়ি আরোপের ফলে গত বছর দামি গাড়ি আমদানি কিছুটা কমে যায়। পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় গাড়ি বিক্রিও হ্রাস পায়। এ কারণে গত বছর বিআরটিএতে এসইউভি গাড়ি নিবন্ধন হয়েছে ৭ হাজার ৭৬৫টি।
র্যানকন গ্রুপ প্রোটনের নতুন যে এসইউভি গাড়ি বাজারে আনছে তার মধ্যে একটি ৬ সিটের ও অন্যটি ৭ সিটের। দুটিরই ইঞ্জিনক্ষমতা ১ হাজার ৫০০ সিসির। র্যানকন গ্রুপের প্রতিষ্ঠান র্যানকন কারসের পরিচালক মোস্তাফিজুর রশিদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আপাতত আমরা প্রোটনের দুটি মডেলের এসইউভি গাড়ি আমদানি করে দেশের বাজারে ছাড়ছি। এসব গাড়ি দেশে সংযোজন শুরু হলে তাতে দাম কয়েক লাখ টাকা কমে যাবে।’