বিশেষ প্রতিবেদক
ভোটের দিন বিএনপির প্রস্তুতি নিয়ে নেতাকর্মীরা বলছেন, আসন্ন নির্বাচন ভোটারবিহীন প্রমাণ করতে নির্বাচনের দিনও কর্মসূচি দেওয়া হবে। সেদিন ছুটির দিন হলেও হরতালের মতো কর্মসূচিও দেওয়া হতে পারে। তবে এখনই তারা ঘোষণা দিচ্ছেন না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি যে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভর করে আন্দোলন এগিয়ে নিচ্ছিলো, তারা বলেছিলো নির্বাচন প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন নির্বাচনের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরেও বিএনপি যদি নির্বাচনের দিন হরতাল বা যেকোন কর্মসূচি দেয় সেটিতো স্পষ্টতই হস্তক্ষেপ।
বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, ৪ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) চলমান কর্মসূচি শেষ হলে শুক্রবার বিরতি দিয়ে ভোটের আগের দিন (শনিবার) ও ভোটের দিন (রোববার) হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা রাজপথে আছি, রাজপথে থাকব। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন এগিয়ে নেওয়া হবে। আমরা কখনও নাশকতায় জড়াইনি, অন্য কোনো পক্ষকে নাশকতা করার সুযোগ দিতে চাই না।’
ভোটের দিন হরতাল, অবরোধের মতো কর্মসূচি দেওয়ার কথা ভাবছেন দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। যদিও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা বলতে চেষ্টা করছেন, ভোটের দিন তারা এমন কোনো কর্মসূচি দেবেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।’ শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।
ম্যাথিউ মিলার বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে, বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে আগ্রহীদের সমর্থন করতে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত অঙ্গীকারের অংশ এটি।”
এদিকে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ‘ভোটারদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। তাদের নিরাপত্তার জন্য আইন করা হয়েছে। যদি কেউ ভোটারদের বাধা দেয়, হুমকি ধমকি দেয়, পথে ঘাটে ঘরে বাইরে যেখানেই হোক, এজন্য শাস্তির বিধান করা হয়েছে।’
সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে চার দফায় পাঁচ দিন হরতাল এবং ১২ দফায় ২৪ দিন অবরোধ কর্মসূচি করে বিএনপি। কিন্তু এতে সরকারকে চাপে ফেলতে না পেরে নির্বাচনের ঠিক ১৭ দিন আগে (২০ ডিসেম্বর) অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয় দলটি। এরপর থেকে ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও তার মিত্ররা।
বিএনপি হরতালের মতো কর্মসূচি দিলে সে নির্বাচনে বাধাদানের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে লে জে (অব) আবদুর রশীদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বারবারই বলছে নির্বাচনে যারা বাধা দিবে তাদের বিরুদ্ধে তারা অবস্থান নিবে এবং তারা চায় অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। এখন পর্যন্ত দৃশ্যত প্রতীয়মান নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। সেই পরিস্থিতিতে যখন কোন দল হরতাল দিয়ে বাধা প্রদান করবে সেটা তো অবশ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কর্মসূচি।