দৈ. কি.ডেস্ক : নির্বাচিত সংসদই কেবল সংবিধান সংশোধনের অধিকার রাখে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র বিনির্মাণে মুক্তিযোদ্ধাদের করণীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এদেশে সংবিধান সংশোধন করার অধিকার একমাত্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের- এই কথাটি ভুলে যাবেন না। যতই পিএইচডি ডিগ্রি থাকুক, এটা নিয়ে আপনারা সংবিধান সংশোধন করতে পারবেন না। আপনারা সুপারিশমালা দিতে পারেন, আপনাদের প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে দেখতে পারেন। রাজনৈতিক দলগুলো যদি গ্রহণযোগ্য মনে করে, সেটি তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে দিয়ে জনগণের ম্যান্ডেট তারা নিয়ে নেবেন। কিন্তু নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া অন্যভাবে সংবিধান সংশোধন করা যায় না।
তিনি বলেন, এই সরকারের প্রথম থেকে চেষ্টা করা উচিত ছিল- একটি ভালো নির্বাচন কমিশন বসাবার জন্য। কিন্তু নির্বাচন কমিশন নিয়ে কোনো কথাবার্তা নাই। তারা কোনো রোডম্যাপ দেয় না। কবে নির্বাচন দেবে তাও বলে না। তারা কী সংস্কার করছে- ছয়টি বিষয়ে সংস্কারের কথা বলেছে, অন্যান্য সংস্কারের ব্যাপারে তারা নিশ্চুপ আছে। আমরা বলতে চাই, এক মাস যথেষ্ট সময়। এখানে (অন্তর্বর্তী সরকার) যারা আছে, তারা দেশের কৃতী সন্তান, তাদের মেধা আছে, তারা বলুক। আর হাসিনার প্রেতাত্মারা এই সরকারের ওপর ভর করে আছে। পুরো পুলিশ বাহিনী, অন্যান্য বাহিনী, সব তো হাসিনার লোকেরা এখানে আছে। তারা এখনো বহাল তবিয়তে আছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা তাদের সাফল্য চাই। সঠিক উপদেশ-পরামর্শ আমরা দিতে চাই। এদেশের ব্রাইট সন্তান হলো এই মুক্তিযোদ্ধারা। এই সরকারের উচিত ছিল প্রথমেই এই মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে বৈঠক করা। তারা এদেশটা স্বাধীন করেছে, কী স্বপ্ন তারা ধারণ করেছে, কী স্বপ্ন এখনো বাস্তবায়ন হয় নাই- সেটি সরাসরি রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছে, তাদের কাছ থেকে শুনে নেয়া উচিত ছিল। আমি আশা করবো, প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে বসবেন।
মেজর হাফিজ বলেন, এই বিপ্লব সেই দিনই সম্পন্ন হবে- যেদিন ১৭ বছর লুটতরাজ যারা করেছে, দেশের ব্যাংকসমূহকে যারা ফোকলা করে দিয়েছে, যারা মানুষ হত্যা করেছে, যারা গুম-খুন করেছে, তাদের শাস্তির বিধান যেদিন করা হবে, সেদিনই এই বিপ্লব সাফল্যমণ্ডিত হবে। আমরা এই বিপ্লবের সাফল্য দেখতে চাই। আমাদের প্রধান করণীয় হলো- আমরা এমন একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করবো বাংলাদেশে, যারা একাত্তরের চেতনাকে বাস্তবায়িত করবে, আগস্ট বিপ্লবের সাফল্যকেও যারা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে আসবে, সেটাই হোক আমাদের আজকের দিনের অঙ্গীকার।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদীন, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক নুরুল হক নুর, এবি পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।