কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় এক গার্মেন্ট কর্মী তরুণী (১৮) গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) কর্মস্থল গাজীপুর থেকে পাকুন্দিয়ার নিজ বাড়িতে ফেরার পর প্রেমিক ও প্রেমিকের এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে বিকালে অটোরিকশাযোগে স্থানীয় তারাকান্দি এলাকায় ঘুরতে বের হলে তারা স্থানীয় একটি বখাটে দলের খপ্পড়ে পড়ে।
বখাটে দলটির সদস্যরা তাদের জিম্মি করে অটোরিকশাসহ তারাকান্দি ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে নিয়ে যায় এবং ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে সেখানে অটোরিকশায় অন্যদের রেখে মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তারাকান্দি ফাজিল মাদ্রাসার পাশের একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ শুরু করে।
মেয়েটির প্রেমিকের বন্ধু মুক্তিপণের টানা এনে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে থানায় গিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ তাৎক্ষণিক সেখানে অভিযান পরিচালনা করে।
এ সময় তরুণীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার এবং বখাটে দলটির তিন সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হচ্ছে, মো. কাউসার আহম্মেদ (২৪), জুবায়েদ হাসান শুভ (১৮) ও তোফাজ্জল হোসেন রাজু (২৪)। তাদের ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেল উদ্ধার করে জব্দ করা হয়। এছাড়া পুলিশের অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে বখাটে দলের বাকি চার সদস্য পালিয়ে যায়।
আটককৃতদের মধ্যে মো. কাউসার আহম্মেদ পাকুন্দিয়া পৌরসভার বীর পাকুন্দিয়া এলাকার মো. আলী আকবরের ছেলে, জুবায়েদ হাসান শুভ একই এলাকার মো. খসরু মিয়ার ছেলে, তোফাজ্জল হোসেন রাজু চর পাকুন্দিয়া এলাকার মুক্তার উদ্দিনের ছেলে।
এছাড়া পালিয়ে যাওয়া চারজন হচ্ছে, উপজেলার তারাকান্দি ভূঁইয়াবাড়ির মো. মাছুম ভূঁইয়ার ছেলে মেহেদী হাসান (২২), তারাকান্দি মানুল্লারচর গ্রামের এরশাদ মিয়ার ছেলে হৃদয় (৩২), তারাকান্দি গ্রামের বাবু (২২) ও চর পাকুন্দিয়া এলাকার হিরু মিয়ার ছেলে ইয়াসিন (২৫)।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. আল আমিন হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পুলিশের তাৎক্ষণিক অভিযানে তরুণীটি প্রাণে রক্ষা পেয়েছে। একের পর এক যুবক কর্তৃক জোরপূর্বক সে ধর্ষিত হয়ে যাচ্ছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই পাঁচজন তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
ফলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধারের সময় মেয়েটি উঠে দাঁড়াতে পারলেও উপর্যুপরি পাশবিকতার শিকার হওয়ায় কুঁকড়ে যাচ্ছিল তার জীর্ণ দেহ। তাকে চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া এ ঘটনায় রবিবার (২৮ জানুয়ারি) তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে পাকুন্দিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সং/২০) এর ৭/৮/৯(৩)/৩০ ধারায় মামলা (নং-১৭, ২৮/০১/২০২৪ ইং) দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি চারজনকে গ্রেপ্তারের জন্যও অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে।