দৈ. কি.ডেস্ক : বিশ্বকাপের আগে দেশের মাটিতে বিশ্বকাপে জায়গা না পাওয়া সেই জিম্বাবুয়ের মতো দলকে ডেকে এনে নিজেদের কন্ডিশনের সুবিধা নিয়ে, সিরিজ জিতে খেলোয়াড়দের মধ্যে জোরাল আত্মবিশ্বাস তৈরি করা হয়েছে বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশ্লেষক ও কোচ নাজমূল আবেদীন।
কিন্তু দিনশেষে তা কাজে লাগেনি। প্রস্তুতি ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হার এবং ভারতের কাছে পরাজয়। ব্যাটিং পারফরম্যান্সে যাচ্ছেতাই। তারপরও আত্মবিশ্বাস নিয়ে গত কয়েকবারের তুলনায় ভিন্ন একটা মানসিকতায় বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ।
ক্রিকেট বিশ্লেষক নাজমূল আবেদীন জানান, দলটির হয়তো অনেক অর্জন নেই, সীমাবদ্ধতাও আছে। তা জেনেই বাংলাদেশ বিশ্বকাপে গেছে। সেটা দূর করার একটা প্রয়াস চলছে। অতি আত্মবিশ্বাসের চেয়ে এটি ভালো। আমার কাছে এটি ইতিবাচক দিক। এটা দলকে সতর্ক রাখবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দলে একটা ভারসাম্য রয়েছে। নতুন অস্ত্র পেয়েছি আমরা, রিশাদ হোসেনের মতো একজন লেগ স্পিনারকে পেয়েছি। পেস বোলিং বিভাগটা সমৃদ্ধ। মোস্তাফিজ ভালো ছন্দে আছে। মিডল অর্ডার আগের চেয়ে শক্তিশালী। টপ অর্ডারের দুর্বলতা নিয়েই বাংলাদেশ বিশ্বকাপে গেছে। টপ অর্ডারের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারলে ভালো একটি দল হবে। তানজিদ ছাড়া বাকিরা ফর্মে ফেরার চেষ্টা করবে এবং করছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হার কতটা কাজে দেয়, তাই দেখার বিষয়।
নাজমূল আবেদীন বলেন, বাংলাদেশের প্রথম মিশন শ্রীলংকা। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ বলে দলের ওপর একটা চাপও থাকবে। সেই দিক থেকে শ্রীলংকা মানসিকভাবে এগিয়ে থাকবে। আরও একটু বেশি আত্মবিশ্বাস থাকবে, বাংলাদেশের মাটিতেই তাদের সিরিজ জয়। তাই বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সের গ্রাফটা ঊর্ধ্বমুখী নয়। কিন্তু প্রথম ম্যাচটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ ম্যাচের ফল ভালো না হলে শুরুতেই ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
তিনি বলেন, শক্তির বিচারে খুব একটা পার্থক্য নেই শ্রীলংকা ও বাংলাদেশের মধ্যে। বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের সাম্প্রতিক উন্নতি বরং আশাজাগানিয়া। কিছু ক্ষেত্রে শ্রীলংকার চেয়ে এগিয়ে। তবে এ ম্যাচে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে ওই চাপ সামলানো। ম্যাচের ফলও নির্ভর করবে তার ওপরই। আর চাপের কারণে বাংলাদেশ দল নিজেই নিজেদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াতে পারে। শ্রীলংকার চেয়ে বড় প্রতিপক্ষ তাই ওই চাপকে মনে করছি।
তিনি আরও বলেন, শ্রীলংকার অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা দলের কাণ্ডারি। বাংলাদেশের জন্য বড় একটা হুমকি হবেন তিনি। বিপজ্জনক খেলোয়াড়। অভিজ্ঞতা আছে। ম্যাচজয়ী অনেক পারফরম্যান্স আছে। চাপের মুখে খেলার সামর্থ্য আছে। ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ খেলোয়াড়দের ভালোভাবে জানেন, বোলার হিসেবে ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতাগুলো কাজে লাগাতে চাইবেন। বাংলাদেশের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞার কারণে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সব কটি ম্যাচ না খেললেও ওয়ানডেতে সফল ছিল। আরেকটা হুমকি আছে। পাতুম নিশাঙ্কা বা বোলার মাতিশা পাতিরানা। পাতিরানার মতো বোলার এক প্রান্তে চাপ তৈরি করতে থাকলে দেখা যাচ্ছে ব্যাটসম্যানরা হাসারাঙ্গাকেই আক্রমণ করতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসছে। ব্যাটিংয়েও তার যে সামর্থ্য, তাতে সব মিলিয়ে বড় হুমকি ওই হাসারাঙ্গাই হবেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ 'ডি' গ্রুপে রয়েছে। এ গ্রুপে আরও আছে— শ্রীলংকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল। ‘ডি’ গ্রুপে সেরা দুইয়ে থাকতে পারলেই মিলবে সুপার এইটের টিকিট।