দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন। এর মধ্যে ২১ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এদের মধ্যে ২ জন স্বতন্ত্র ও বিভিন্ন দলের ১৯ প্রার্থী রয়েছেন। কোনো প্রার্থীকে জামানত রক্ষা করতে হলে মোট কাস্টিং ভোটের ৮ শতাংশের থেকে একটি ভোট বেশি পেতে হবে। এর নিচে পেলে তিনি জামানত হারাবেন। নির্বাচনী বিধিমালা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন। এ তথ্য অনুযায়ী ২১ জন প্রার্থী কাস্টিং ভোটের ৮ শতাংশের কম ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, ফকিরহাট ও মোল্লাহাট) আসনে ৩ লাখ ৫২ হাজার ৮২১টি ভোটের মধ্যে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৯৩টি ভোট কাস্ট হয়েছে। এ আসনে ৬ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। বিজয়ী প্রার্থী শেখ হেলাল উদ্দিন পেয়েছেন ২ লাখ ১৯ হাজার ৯৩৯ ভোট। এ আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ৫ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন- বাংলাদেশ কংগ্রেসের এইচ এম আতাউর রহমান আতিকী ১ হাজার ১৭৫ ভোট, এনপিপির বাসুদেব গুহ ২ হাজার ০৬৫, জাতীয় পার্টির মো. কামরুজ্জামান ৫ হাজার ২১০, বিএনএমর মো. মঞ্জুর হোসেন শিকদার ২ হাজার ৭৯৬ এবং তৃণমূল বিএনপির মো. মাহফুজুর রহমান ১ হাজার ৭৮৫ ভোট। বাগেরহাট-২ (সদর ও কচুয়া) আসনেও ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫ জনই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে ৩ লাখ ২০ হাজার ১৪১ ভোটের মধ্যে ২ লাখ ৫ হাজার ৮৭২টি ভোট কাস্ট হয়েছে। এখানে বিজয়ী প্রার্থী শেখ তন্ময় পেয়েছেন ১ লাখ ৮২ হাজার ৩১৮ ভোট। জামানত হারানো প্রার্থীরা হলেন- সতন্ত্র প্রার্থী এসএম আজমল হোসেন ১ হাজার ৪৫৫ ভোট, জাকের পার্টির খান আরিফুর রহমান ৩ হাজার ১৬৩, তৃণমূল বিএনপির মরিয়ম সুলতানা ২ হাজার ৭৬২, বিএনএমর সোলায়মান শিকদার ১ হাজার ৯০৭ এবং জাতীয় পার্টির হাজরা শহিদুল ইসলাম ৪ হাজার ১৭৪ ভোট। বাগেরহাট-৩ (মোংলা-রামপাল) আসনে বিজয়ী প্রার্থী নৌকার হাবিবুন নাহার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারাদারের জামানত রক্ষা হয়েছে। এ আসনে বিভিন্ন দলের অন্য ৫ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এই আসনে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৫৮ ভোটের মধ্যে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৩০ ভোট কাস্ট হয়েছে। এখানে বিজয়ী প্রার্থী হাবিবুন নাহার পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৩৭২, স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়েছেন ৫৮ হাজার ৪৬৮ ভোট। জামানত হারানোরা হলেন- বাংলাদেশ কংগ্রেসের মফিজুল ইসলাম গাজী ২০৮, তৃণমূল বিএনপি ২২৮, জাতীয় পার্টির মো. মনিরুজ্জামান মনি ৬৭০, বিএনএমর ৪২৩ এবং জাসদের শেখ নুরুজ্জামান মাসুম ৩৩৮ ভোট।
অন্যদিকে বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা) আসনেও ৭ প্রার্থীর মধ্যে ৬ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এই আসনে ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৩১৪ ভোটের মধ্যে ২ লাখ ১৪ হাজার ৭৬৭ ভোট কাস্ট হয়েছে। এখানে বিজয়ী প্রার্থী নৌকার এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ পেয়েছেন ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪ ভোট। জামানত হারানো প্রার্থীরা হলেন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মুহাম্মদ বদরুজ্জামান ৯৯২, এনপিপির মোহাম্মদ লোকমান ১ হাজার ৬১১, বিএনএমর মো. রেজাউল ইসলাম রাজু ৬৩৬, তৃণমূল বিএনপির লুৎফুন নাহার রিক্তা ৬০৭, জাতীয় পার্টির সাজন কুমার মিস্ত্রী ২ হাজার ২২০ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জামিল হোসাইন পেয়েছেন ৫ হাজার ৩৭৬ ভোট। তবে এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম আর জামিল হোসেন নির্বাচনের দিন দুপুরে ভোট বয়কট করেছিলেন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহা. খালিদ হোসেন বলেন, খুবই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ৪টি আসনের মধ্যে ২১ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী তারা সবাই কাস্টিং ভোটের ৮ শতাংশের কম ভোট পেয়েছেন। বিজয়ী ৪ প্রার্থী ও বাগেরহাট-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারাদারের জামানত রক্ষা হয়েছে।