নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় যেকোনও ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হার্ডলাইনে থাকবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু এরপরও থেমে নেই নাশকতা।
রবিবার রাতে রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পর কাওরান বাজার এলাকায় আরেকটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দেওয়া হয়। গাড়িতে থাকা সোফা সেটে আগুন ধরলেও, স্থানীয়রা দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলে। রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্লবীতে শিকড় পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এসময় প্রত্যক্ষদর্শী হাসান বলেন, রাতে আগুন ধরিয়ে সকালে যারা বের হবে তাদের ভয় দেখানো হয়। এটা যানমালের ক্ষতি, সে হিসাব করে না। আমরা আর অবরোধ চাই না।
বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা ফের ৪৮ ঘণ্টা (৫ ও ৬ নভেম্বর) অবরোধ কর্মসূচির আগেই শনিবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ও রাতে রাজধানীর পৃথক স্থানে পরপর চারটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এদিকে রবিবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৬ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দুটি বাসসহ একটি মিনি ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস রয়েছে। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলামোটরে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রশ্ন উঠেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সতর্কতার পরও এত গাড়িতে অগ্নিসংযোগ কীভাবে হচ্ছে?
সোমবার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে রাস্তাঘাট ছিলো তারপরেও অনেকটা স্বাভাবিক। ড্রাইভার ছাড়া নিজে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন সেজান। তিনি বলেন, দশদিনের জন্য দেশে এসেছি। এসে এরমধ্যে পড়েছি। দিনের পর দিন বাড়িতে বন্দি করে রাখা এটা কেমন রাজনীতি?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রথমে ৭২ ঘণ্টা তারপর ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ঘোষণা করে দায় সারছে বিএনপি। তাছাড়া মাঠেও নেই তারা। শুধু জ্বালাও পোড়াও করে ভয় দেখিয়ে অবরোধ পালনে বাধ্য করছে। একের পর এক বাস পুড়িয়ে বাস্তার স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্ন করতে চেষ্টা করছে। এটা কোনো ভাবেই রাজনৈতক দলের কর্মসূচি হতে পারে না।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিরোধের জায়গায় জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে না পারলে চোরাগোপ্তা হামলা ঠেকানো যাবে না। একইসঙ্গে পুলিশের টহল আরও জোরদারের কথা বলছেন তারা। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) জানিয়েছে, গোয়েন্দা নজরদারি কার্যক্রম চলমান থাকবে। কেউ যদি কোনও ধরনের নাশকতা কিংবা সহিংসতার পরিকল্পনা করে, সঙ্গে সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। যেকোনও উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের স্পেশাল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে।