দৈ. কি.ডেস্ক : এ যেন ঢাকার রাজপথে পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বরের ফিরে আসা। যে দিনকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছিল দেশের রাজনৈতিক নতুন ইতিহাস। সেদিনকে স্মরণ করে শুক্রবার রাজধানীতে বিএনপির র্যালিতে লাখো মানুষের ঢল নামে। এতে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
নেতারা জানান, সবার অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত, বাংলাদেশের ইতিহাসে রাজধানীতে এত মানুষের উপস্থিতি কোনো রাজনৈতিক দলের র্যালিতে অতীতে দেখা যায়নি। র্যালিটির প্রথম ভাগ যখন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে পৌঁছায়, তখনও শেষ ভাগে থাকা নেতাকর্মীরা মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ছিলেন। এর বাইরে অলিগলিও নেতাকর্মীদের পদচারণায় ছিল পরিপূর্ণ।
ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের দিন বৃহস্পতিবার অফিস খোলার দিন হওয়ায় একদিন পিছিয়ে শুক্রবার ছুটির দিনে র্যালির আয়োজন করে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নয়াপল্টন থেকে শান্তিনগর মোড় পর্যন্ত পুলিশের অনুমতি নিয়ে কয়েকটি র্যালি করেছিল দলটি। এই রুটের বাইরে ১৭ বছর পর এই প্রথম মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত র্যালি করল দলটি।
নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ থেকে বেলা সোয়া ৩টার দিকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। পরে বিকাল ৪টার দিকে শুরু হয় র্যালি। দেশাত্মবোধক গান, বাউল গান ও ঢোলের তালে তালে এবং মাইকে স্লোগানে স্লোগানে র্যালিটি কাকরাইল মোড়-কাকরাইল মসজিদ-মৎস্যভবন-ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-শাহবাগ-হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল-বাংলামোটর-কাওরান বাজার-ফার্মগেট হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে গিয়ে শেষ হয়। র্যালি চলার সময়ে রাস্তার দুই পাশে হাজার হাজার মানুষ করতালি দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানান।
নেতারা হাত তুলে দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দেন। বিএনপির মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা একটি খোলা ট্রাকে এ মিছিলে অংশ নেন। তবে সন্ধ্যায় ৭টার দিকে র্যালির প্রথম ভাগ যখন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে পৌঁছায় তখনও শেষ ভাগে থাকা নেতাকর্মীদের দেখা যায় মতিঝিলের শাপলা চত্বরে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ঐতিহাসিক এই র্যালি।
র্যালিতে অংশ নেওয়া গাজীপুর মহানগর বিএনপির কর্মী জাহিদুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন পর বাধাহীন মুক্ত পরিবেশে এ কর্মসূচি পালন করছেন। বিগত সরকারের ১৬ বছর মানুষ বন্দি অবস্থায় ছিলেন। কথা পর্যন্ত বলতে পারেননি, ভোট দিতে পারেননি। এখন সরকারের কাছে প্রত্যাশা, মানুষ এখন ভোট দিতে চায়। সেজন্য দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা নেওয়া।