২০২৩ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান ১০০ নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে প্রভাবশালী মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস। এই তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতবারও তিনি এই তালিকায় ছিলেন।
তালিকায় একেবারে শীর্ষে রয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট বেলজিয়ামের রাজনীতিবিদ উরসুলা ফন ডার লিয়েন। আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রয়েছেন তালিকার ৪৬তম অবস্থানে। মোট ছয়টি ক্যাটাগরির মধ্যে তালিকায় প্রথম চারজনই এসেছেন রাজনীতি ও নীতি ক্যাটাগরি থেকে। আর এই ক্যাটাগরিতে শেখ হাসিনা রয়েছেন নবম স্থানে।
‘ফোর্বস’-এর এবারের তালিকায় রাজনীতি ও নীতি বিভাগে ১৮ ক্ষমতাধর নারী স্থান পেয়েছেন। এই তালিকায় নবম স্থানে পাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়ে ‘ফোর্বস’ লিখেছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময়ের প্রধানমন্ত্রী তিনি। বর্তমানে তিনি চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। গত নির্বাচনে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সংসদের ৩শ আসনের মধ্যে ২শ ৮৮টিতে জয়ী হয়। টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকারপ্রধান হন শেখ হাসিনা।
‘ফোর্বস’আরও লিখেছে, শেখ হাসিনা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা নারী প্রধানমন্ত্রী। আগামী জানুয়ারিতে বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনে জয় পেলে পঞ্চম মেয়াদে (টানা চতুর্থ মেয়াদ) ক্ষমতায় বসতে পারেন শেখ হাসিনা।
ফোর্বস-এর তালিকা এবং প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে তাদের বিশ্লেষণ স্পষ্ট বলে দিচ্ছে, শেখ হাসিনা টান তিন মেয়াদসহ মোট চার মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাবস্থায় বাংরাদেশে সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটেছে। তিনি নিজ নেতৃত্বগুণে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে উচ্চ আসনে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশ আজ এক মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে পরিণত হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই আজ বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে শুরু করে, বিদ্যুৎখাত, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। দেশটিতে প্রথমবারের মতো মেট্রোরেল চালু হয়েছে। সবই শেখ হাসিনার দক্ষতা এবং সঠিক নেতৃত্ব ও পরিকল্পনার কারণে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশকে দারিদ্রমুক্ত করতে এবং ভূমি ও গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়ে মানুষের মন জয় করে নয়েছেন। বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিলেন। এসব কারণে আজ তিনি বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাধর নারী নেতৃত্বের মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন। গত বছরও এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
ফোর্বস’ এর এই তালিকায় গত বছরের মতো এবারও শীর্ষে রয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন।
ফোর্বস’-এর এবারের তালিকায় শীর্ষে থাকা ইসির প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তৎপরতা এবং কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লগার্দ ও যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। চতুর্থ স্থানে আছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। পঞ্চম স্থানে মার্কিন তারকা টেইলর সুইফটের নাম রয়েছে। এশিয়ার মধ্যে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এবারের তালিকায় ৩২তম অবস্থানে রয়েছেন। তিনিসহ ভারতের চারজন নারী এ তালিকায় জায়গা পেয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা-বাণিজ্যবিষয়ক সাময়িকী ‘ফোর্বস’ ২০০৪ সাল থেকে বিশ্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবচেয়ে ক্ষমতাধর ১০০ নারীর তালিকা প্রকাশ করে আসছে। তালিকা করার ক্ষেত্রে অর্থ, গণমাধ্যম, প্রভাব ও প্রভাবের ক্ষেত্র—এই চার বিষয় বিবেচনায় নেয় ফোর্বস।