বিশেষ প্রতিবেদক
মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় চাপিয়ে সম্প্রতি ১৩টি দেশের মোট ৩৭ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বিধিনিষেধ দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চীন, রাশিয়া, ইরান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো, লাইবেরিয়া, সুদান, দক্ষিণ সুদান, হাইতি, ইন্দোনেশিয়া, উগান্ডা ও জিম্বাবুয়ের নাগরিক ওই ৩৭ জন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর ফলে দেশগুলোর জনগণের পক্ষে খাদ্য এবং ওষুধের বন্দোবস্ত করাও কঠিন হয়ে গেছে। ১৯৬২ সাল থেকে কিউবা, ১৯৭৯ সাল থেকে ইরান, ২০১১ থেকে সিরিয়া সহ ২০টিরও বেশি দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
সারা পৃথিবীতে স্বঘোষিত মানবাধিকারের ফেরিওয়ালা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজের মানবাধিকার পরিস্থিতি কেমন? বাস্তবতা ভয়ঙ্কর। দেশটিতে অর্থের রাজনীতি, জাতিগত বৈষম্য, অস্ত্রের সহিংসতা, পুলিশী সহিংসতা এবং আর্থিক দুর্নীতি মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে। মানবাধিকার, আইন এবং ন্যায়বিচারের দেখা পাওয়া সেখানে এখন কঠিন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে মার্কিন তৎপরতা ইদানিং আর তেমন দেখা যাচ্ছে না। তবে ভিসানীতি এবং নতুন শ্রমনীতি ব্যবহার করে কিছুদিন আগেও বাংলাদেশে চাপ প্রয়োগ লক্ষ্য করা গেছে। শ্রমনীতি ঘোষণা করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, শ্রমিকদের অধিকার হরণ করলে প্রয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের দেশে নির্বাচন কেমন হয়। সেখানেও নির্বাচনে চলে কালো টাকার খেলা, সহিংসতা এবং ভীতি প্রদর্শন। ভোট বাক্স নিরীক্ষণের জন্য সশস্ত্র স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করার খবরও জানা যায়।
এই সব অস্ত্রকে অবৈধ মনে করার সুযোগ নেই। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৫%এরও কম মানুষ থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। অথচ সেখানকার নাগরিকরা পৃথিবীর ৪৬% বেসামরিক বন্দুকের মালিক। দেশের অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মন জয় করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রায় অর্ধেক অঙ্গরাজ্যে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ছেড়েই দিয়েছে বলা যায়। ফলে বন্দুকবাজিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২২ সালে ৬০০টিরও বেশি বন্দুক সহিংসতায় ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ হতাহত হয়, ৪৩ হাজার ৩৪১ জন নিহত এবং ৩৭ হাজার ৭৬৩ জন আহত। তখন মোট ৬৩৬টি Mass Shootingএর ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ এসব ঘটনা দিনে গড়ে ২টি। এসবের মধ্যে স্কুলে গুলি চালানোর সংখ্যা ৩০২। ১৮ বছরের কম বয়সী ৫ হাজার ৮০০রও বেশি শিশু ওই বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে আহত বা নিহত হয়েছে। বন্দুক সহিংসতা এখন ‘আমেরিকান রোগ’ হয়ে উঠেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মাথা ব্যথার সমাধান যেন মাথা কেটে ফেলা। পুলিশি সহিংসতা যুক্তরাষ্ট্রে ভয়ঙ্কর চেহারা পেয়েছে। ২০২২ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের সহিংসতায় রেকর্ড ১ হাজার ২৩৯ জন মারা গেছে। অধিকাংশের বিচার দূরে থাক, অভিযোগই তোলা হয়নি। ওই বছরের ২৭ জুন ওহাইওর আকরনে পুলিশ নিরস্ত্র ২৫ বছর বয়সী আফ্রিকান আমেরিকান জেল্যান্ড ওয়াকারকে ৯০ বারের বেশি গুলি করে হত্যা করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কারাবাসের হার পৃথিবীর সর্বোচ্চ। কারাগারগুলোর অবস্থা ভয়াবহ। ২০২২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি লাখে প্রায় ৫০০ জন কারাবন্দী ছিল, যা ব্রিটেনের প্রায় পাঁচ গুণ, কানাডার ছয় গুণ এবং জার্মানির নয় গুণ। মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের কারাগারগুলোতে বন্দীদের আলো বা পরিষ্কার পানি ছাড়া অন্ধকার কক্ষে আটকে রাখার অভিযোগ আছে। ২০২২ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাজ্য এবং ফেডারেল কারাগারে ১.২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে বন্দী করে। প্রায় ৮ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক শ্রমে নিযুক্ত করা হয়। কাজ করতে অস্বীকার করলে তাদেরকে নির্জন কারাবাস দেয়া হয়, পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয় না। গত এক দশকে, কারা প্রশাসকরা কারাগারের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি নারী বন্দীদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারীর উপর যৌন নিপীড়ন মর্মান্তিক। দেশটিতে প্রতি ৫ নারী শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ জন বলেছে যে, তারা কলেজে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এমন অপরাধ থেকে মুক্ত নয় দেশটির সশস্ত্র বাহিনীও। ২০২১ সালে মার্কিন সামরিক বাহিনীতে যৌন নির্যাতনের পরিমাণ আগের চেয়ে ১৩% বেড়েছে। প্রায় এক চতুর্থাংশ নারী সৈন্য বলেছে যে, তারা সামরিক বাহিনীতে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে এবং অর্ধেকেরও বেশি বলেছেন যে, তারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। ৭৪% এশিয়ান আমেরিকান, নেটিভ হাওয়াইয়ান এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের নারীরা ২০২২ সালজুড়ে বর্ণবাদ-বৈষম্যের মুখোমুখি হয়েছেন।
বর্ণবাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যান্সার। সেখানে জাতিগত সংখ্যালঘুরা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দেশটিতে জাতিগত পক্ষপাতদুষ্ট Hate Crime নাটকীয়ভাবে বেড়েছে৷ ৮১% এশিয়ান আমেরিকান বলেছেন যে, এশিয়ানদের ওপর সহিংসতা বাড়ছে। শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের পুলিশের হাতে নিহত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৩ গুণ বেশি। দেশটিতে জাতিগত বৈষম্য ব্যাপক। ৩ হাজারেরও বেশি আফ্রিকান আমেরিকানের সাক্ষাৎকার নিয়ে জানা গেছে যে, তাদের ৮২% মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রে আফ্রিকান বংশধরদের জন্য বর্ণবাদ বড় একটি সমস্যা। ২০২২ সালে ল্যাটিনো আমেরিকানদের ৬৫% বর্ণবাদী মৌখিক আক্রমণের মন্তব্যের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছে।
২০২২ সালের ১৪ মে পেটন গেনড্রন নামের এক শ্বেতাঙ্গ বন্দুকধারী নিউইয়র্কের বাফেলোতে একটি সুপারমার্কেটে বর্ণবাদী গণহত্যায় ১০ আফ্রিকান আমেরিকানকে হত্যা এবং তিনজনকে আহত করে। হত্যাকারী লাইভ স্ট্রিমিংয়ের জন্য হামলার ভিডিও ধারণও করেছিল। সিএনএন গত ৩০নভেম্বর ২০২২ তারিখে রিপোর্ট করেছে যে, ইয়ঙ্কার্সে, এক ব্যক্তি একজন বয়স্ক এশিয়ান নারীকে ১০০ বারের বেশি ঘুষি মেরেছে, তাকে বর্ণবাদী গালাগালি দিয়েছে, তার শরীরে বারবার থুতু দিয়েছে। দেশটিতে ১৯ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ ২০২২এর মধ্যেই প্রায় ১১ হাজার ৫০০টি এমন Hate Crimeএর রিপোর্ট পাওয়া গেছে।
কৃষ্ণাঙ্গ এবং শ্বেতাঙ্গ মার্কিনীদের মধ্যেও ব্যাপক অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মাথাপিছু সম্পদের অনুপাত ৬ঃ১। ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ১৯.৫% কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছিল। আবাসন নীতিতেও যুক্তরাষ্ট্রে আছে বৈষম্য। কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য হোম লোনের সুদের হার শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে বেশি।
২০২২ সালে ৫ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি মার্কিন নাগরিক এক রাতে গৃহহীন হয়। তাদের ৪০% রাস্তায়, পরিত্যক্ত ভবনে বা মানব বাসস্থানের জন্য উপযুক্ত নয় এমন সব স্থানে বাস করতো। স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের জাতিগত বৈষম্য ভয়াবহ। সেখানে জাতিগত সংখ্যালঘুদের বেলায় মাতৃমৃত্যু এবং অসুস্থতার উচ্চ হার দেখা যায়। কোভিড-১৯ মহামারী দেশটিতে জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর অনুপাত কমিয়ে দিয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার হিস্পানিক জনসংখ্যা ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৫.৭ বছর আয়ু হারিয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠী হারিয়েছে ৩.৮ বছর, এবং এশিয়ান জনগোষ্ঠী ৩ বছর আয়ু হারিয়েছে। অথচ শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী মাত্র ১.৯ বছর আয়ু হারিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে গড় আয়ুই উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে দেশটির মানুষের আয়ু ২.৭ বছর কমে ৭৬.১ বছর হয়ে গেছে, যা ১৯৯৬ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন। মাদকাসক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিবছর ১ লাখ মার্কিনী মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারে মারা যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীরা চরম নিষ্ঠুর আচরণের সম্মুখীন। ২০২২ সালে দেশটির সীমান্তে প্রায় ২.৪ মিলিয়ন অভিবাসী গ্রেপ্তার করা হয়, যা রেকর্ড। দেশটির দক্ষিণ সীমান্তে অভিবাসীদের মৃত্যুর সংখ্যা ৮৫৬তে পৌঁছেছে, যা এক বছরে সবচেয়ে মারাত্মক।
ধর্মীয় অসহিষ্ণুতাও যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র। ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোট ১ হাজার ৫টি ধর্মীয় ঘৃণামূলক অপরাধের রিপোর্ট করা হয়। এর মধ্যে ৩১.৯% ইহুদি বিরোধী ঘটনা, ২১.৩% শিখ বিরোধী, ৯.৫% ইসলাম বিরোধী, ৬.১% ক্যাথলিক বিরোধী, ৬.৫% অর্থোডক্স বিরোধী ঘটনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামের প্রতি অসহিষ্ণুতা তীব্র হয়েছে, এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে মারাত্মকভাবে বৈষম্য করা হচ্ছে। মুসলমানরা অন্য ধর্মের তুলনায় ৫ গুণ বেশি পুলিশি হয়রানির শিকার হয় সেখানে।
শিশু নির্যাতনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চরম নিষ্ঠুর। এই নিষ্ঠুরতা ঐতিহাসিক। ফেডারেল ইন্ডিয়ান বোর্ডিং স্কুল ইনিশিয়েটিভ নেটিভ আমেরিকান শিশুদেরকে তাদের পরিবার থেকে আলাদা করে, তাদের ভাষা-সংস্কৃতি ছিনিয়ে নিয়ে শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান সমাজে আত্তীকরণ করার চেষ্টা বিভিন্ন সময় চালিয়েছে ফেডারেল সরকার। ১৮১৯ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭টি রাজ্যে ৪০৮টি ফেডারেল স্কুল ছিল। এমন ১৯টি বোর্ডিং স্কুল ৫০০রও বেশি নেটিভ আমেরিকান, নেটিভ আলাস্কান এবং নেটিভ হাওয়াইয়ান শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী। তদন্ত শেষ হলে রেকর্ডকৃত মৃত্যুর সংখ্যা কয়েক হাজার হবে বলে আশঙ্কা।
শিশু দারিদ্র্যের হার যুক্তরাষ্ট্রে এখন খুবই বেশি। ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় দারিদ্র্যের হার ছিল ১২.৮% এবং শিশু দারিদ্র্যের হার ছিল ১৬.৯%। দেশটিতে শিশু দারিদ্র্যের হার ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ১২.১% থেকে বেড়ে ২০২২ সালের মে মাসে ১৬.৬%এ দাঁড়িয়েছে, যা দারিদ্র্যের মধ্যে ৩.৩ মিলিয়ন অতিরিক্ত শিশুর প্রতিনিধিত্ব করে। ২০১৮ সাল থেকে দেশটিতে শিশু শ্রম ৭০% বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ অর্থবছরে ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় অপ্রাপ্তবয়স্কদের কর্মসংস্থান ২৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও একমাত্র দেশ যেটি শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষর করেনি।
নিজের দেশে এত এত বৈষম্যের সমাধান না খুঁজে সামরিক শক্তির অপব্যবহার দিয়ে পৃথিবীজুড়ে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একুশ শতকের শুরু থেকে, দেশটি ‘সন্ত্রাস বিরোধী’ নামে ৮৫টি দেশে সামরিক অভিযান চালিয়েছে। এসব অভিযানে কমপক্ষে ৯ লাখ ২৯ হাজার বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, ৩৮ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত, মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ২৩টি প্রক্সি যুদ্ধ শুরু করেছে। ২০০১ সাল থেকে আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, পাকিস্তান, সোমালিয়া, সিরিয়া এবং ইয়েমেনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একারই চালানো বিমান হামলা থেকে ছোড়া প্রায় ১ লাখ বোমার আঘাতে ৪৮ হাজার বেসামরিক লোক মারা গেছে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মুন্সি ফয়েজ বলেন, ‘বন্দুক হামলায় মারা যাওয়া সাধারণ মানুষের সংখ্যাটাও আমেরিকায় ঊর্ধ্বমুখী। মৃত ও আহতের তালিকায় আছে রেকর্ড সংখ্যক শিশুরা। গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের তালিকায় সেসব হামলায় কতজন দোষী গ্রেফতার বা বিচারের সম্মুখীন হয়েছে সেটাও দেখা যায়। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, সেই তালিকা অত্যন্ত হতাশাজনক। অথচ আমেরিকা আমাদের দেশের যেকোনও হামলাতে উদ্বেগের যন্ত্রণায় ভোগেন।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার পরিস্থিতি সুখকর নয়। সাধারণ মানুষের মানবাধিকারের বালাই নেই, সাদাকালো গায়ের বর্ণবৈষম্য ইত্যাদি ঘটনার চিত্র উঠে এসেছে। এ বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক ও জাতীয় গণমাধ্যম থেকে সংগ্রহ করে উপস্থাপন করা হয়েছে। জাতিসংঘসহ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ও কর্মীদের ব্যাপকভাবে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিতে কাজ করে যেতে হবে।’