নিজস্ব প্রতিবেদক
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারকে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে আবারও চপেটাঘাত খেলেন কথিত বাংলাদেশি সাংবাদিক লাভলু আনসারী। ম্যাথু মিলার তার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে প্রসঙ্গ পাল্টে অন্য সাংবাদিকের কাছে চলে যান। এর আগে লাভলু আনসারীর মাইক বন্ধ করে দিয়েছিলেন ম্যাথু মিলার।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্টে্রর পররাষ্ট্র বিভাগের নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন লাভলু আনসারী।
এই সাংবাদিক মিলারের কাছে জানতে চান, বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ২০২২ সালের সন্ত্রাসবাদের প্রতিবেদন বিষয়ে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায়, বাংলাদেশ সরকার সক্রিয়ভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ফলে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ কমে গেছে। কিন্তু এখন শঙ্কা জেগেছে, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে যে সহিংসতা হচ্ছে— এতে করে সেখানে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর পুনরুত্থানের হতে পারে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি? এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনা নিয়ে আপনি কি কিছু জানাবেন?
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার কোনো উত্তর দেননি। তিনি সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি এড়িয়ে যান। মিলার বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি যে, বাংলাদেশে আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই। এটাই আমাদের নীতি। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে এটিই আমাদের বিবেচ্য বিষয়।’
সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ায় ওই সাংবাদিক পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, প্রশ্ন এটি ছিল না। প্রশ্ন ছিল সন্ত্রাসবাদ নিয়ে, সন্ত্রাসবাদের উত্থান নিয়ে। নির্বাচন নিয়ে নয়।
উত্তরে মিলার বলেন, ‘আমি বুঝতে পেরেছি। আমরা গতকাল বা কয়েকদিন আগে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছি। ওই প্রতিবেদনে যা আছে তার চেয়ে আমার বেশি কিছু বলার নেই।’
প্রসঙ্গত গত প্রায় এক বছর ধরে বাংলাদেশ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, মানবাধিকার পরিস্থিতি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধাদান দেওয়ার নানা বিষয় নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি একতরফা প্রশ্ন করে আসছেন। এসব শুনতে শুনতে পররাষ্ট্র দপ্তরের কান ঝালাপালা পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের।
এব্যাপারে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ‘ওই সাংবাদিক মূলত বাংলাদেশকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে আসছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর তার কূটকৌশল বুঝতে পেরে এখন আর তার কোনো প্রশ্নের জবাব দিচ্ছে না। কারণ একই প্রশ্নই তিনি ঘুরেফিরে করতেন। তার এসব প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যাওয়াতেই বিরক্তির চিত্র ফুটে ওঠেছে মুখপাত্রের চেহারায়। ম্যাথু মিলার খুবই হাস্যজ্জোলভাবে তাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন।’
উল্লেখ্য, লাভলু আনসারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উপ-প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বসবাস করেন এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে গিয়ে বাংলাদেশকে নিয়মিত হেয় করার চেষ্টা করেন।