দৈ. কি.ডেস্ক :নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়ে ঈদুল আজহার জামাতের জন্য প্রস্তুত উপমহাদেশের সর্বপ্রাচীন ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। সেই সঙ্গে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা, মুসল্লিদের আসা-যাওয়ার জন্য এ বছরও থাকছে দুটি স্পেশাল ট্রেন। এটি হবে এ ঈদগাহ ময়দানের ১৯৭তম ঈদুল আজহার জামাত। ঈদের জামাত শুরু হবে সকাল ৯টায়।
ঈদ জামাতকে ঘিরে শোলাকিয়ায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সার্বিক নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। মুসল্লিদের সুবিধার জন্য বরাবরের মতোই ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুটি স্পেশাল ট্রেন আসা-যাওয়া করবে।
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অন্য সব মাঠের ন্যায় নেই কোনো সামিয়ানা টানানোর কাজ। এটিই এই ঈদগাহ মাঠের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। খোলা আকাশের নিচে যুগ যুগ ধরে এ মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদুল আজহার জামাত। এরই মধ্যে দাগ কাটা, বালু ফেলা, দেয়ালে রং করাসহ মাঠের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। এবারও শোলাকিয়া দেশবিদেশের লাখো মানুষের ঢল নামবে বলে আশা করছে আয়োজকরা।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া মাঠের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মুসল্লিদের সুবিধার জন্য ভৈরব ও ময়মনসিংহ থেকে শোলাকিয়া স্পেশাল নামের দুটি বিশেষ ট্রেন জামাতের আগে ও পরে চলাচল করবে ।
জামাতকে নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। চার স্তরের নিরাপত্তার পাশাপাশি, মাঠে থাকবে দুই প্লাটুন বিজিবি ও সাদা পোশাকের পুলিশ। এছাড়াও মাঠের বিভিন্ন প্রবেশ পথে থাকছে আর্চারি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। নামাজ শুরুর আগে পুরো মাঠ তল্লাশি করা হবে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বেলা ১১টায় ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শনকালে পৃথক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে গণমাধ্যমকর্মীদের এ সর্বপ্রাচীন ঈদগাহ ময়দানের ঈদুল আজহার প্রস্তুতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন।
জানা যায়, সুদূর ইয়ামেন থেকে ইসলামের ঐশী বাণী প্রচারের উদ্দেশে আগত শোলাকিয়া সাহেব বাড়ির পূর্ব পুরুষ শাহ সূফি সৈয়দ আহমেদের হাতে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের গোড়াপত্তন হয়। কিশোরগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠে নরসুন্দা নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৮২৮ সালে ঈদুল ফিতরের জামাতে তিনি নিজেই ইমামতি করেন।আর সেই জামাতের মুসল্লিদের কাতার গণনায় সোয়া লাখ মুসল্লির উপস্থিতি পাওয়া যায়। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। উচ্চারণ বিবর্তনের ফলে এ ঈদগাহ ময়দানটি এখন শোলাকিয়া নামেই সমধিক পরিচিত।