বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় রাজিয়া খাতুন (২০) সন্তান প্রসবের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে স্ট্রোক করে মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ভোরে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়ে মারা যান তিনি।
রাজিয়ার খালাতো ভাই মো. রোকোনুজ্জামান মোড়ল এ বিষয়ে বলেন, বুধবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটে রাজিয়া সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার মৌতলা ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। এরপর তার কিছু জটিলতা দেখা দেয় এবং ভোর ৪টার সময় মৃত্যুবরণ করেন।তিনি আরও বলেন, জটিলতা দেখা দেওয়ার পর রাতে অ্যাম্বুলেন্স আনা হয়েছিল। কিন্তু একটা সময় অবস্থা ভালো হওয়ায় সেই অ্যাম্বুলেন্স ফেরত পাঠানো হয়। এরপর ভোরের দিকে মারা যান। পরে আবার অ্যাম্বুলেন্স এনে তাকে সাতক্ষীরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদ মেহেদি জানান, ফুটবলার রাজিয়া দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। গতকাল রাত ১০টার দিকে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। পরে রাত ৩টায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে থাকে। একপর্যায়ে স্ট্রোকে করেন রাজিয়া। পরে তাকে কালিগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভোর ৪টা দিকে তার মৃত্যু হয়।
রাজিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন। তিনি বলেন, আমি মাত্রই শুনলাম। খুব খারাপ লাগছে। রাজিয়া অত্যন্ত ভালো একজন মানুষ ছিল। খেলতোও দারুণ। আমি তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি। আল্লাহ তাকে বেহেস্ত নসিব করুক। তার পরিবারকে ধৈর্য্যধারণ করার তৌফিক দিক।রাজিয়া খাতুন এক সময় বয়স ভিত্তিক দলের নিয়মিত মুখ ছিলেন। ২০১৯ সালে জাতীয় দলের ক্যাম্প থেকে বাদ পড়েন। এরপর খেলেন ঘরোয়া লিগে। এফসি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কাচারীপড়ার হয়ে গত দুই লিগ খেলেছিলেন রাজিয়া। তার বড় অর্জন ছিল ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। এছাড়া সে ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল রাউন্ডে খেলেছিলেন।
২০১৮ সালে ভুটানে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৮ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ১-০ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেই দলে ছিলেন রাজিয়া। চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পেয়েছিলেন সংবর্ধনা ও ১০ লক্ষ টাকা।