নিউজ ডেস্ক:রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক প্রয়াত অ্যালেক্সি নাভালনিকে গোপন স্থানে সমাহিত করতে হবে, রুশ কর্তৃপক্ষের এমন প্রস্তাব মেনে নিতে বিরোধীদলীয় এই নেতার মাকে তিন ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে।
অন্যথায়, নাভালনির মরদেহ আর্কটিক সার্কেল পেনাল কলোনিতেই সমাহিত করা হবে বলে নাভালনির মুখপাত্রের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।
বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর কারাগার হিসেবে পরিচিত আর্কটিক পেনাল কলোনিগুলোর একটিতে বন্দি থাকা অবস্থায় গত শুক্রবার নাভালনির মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হয়।
এদিকে নাভালনির মা অভিযোগ করেছেন, ছেলের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, এমন সনদে স্বাক্ষর করতে তাকে বাধ্য করেছে কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া লাভালনায়ার দাবি, পুতিনের নির্দেশেই তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।
যদিও ক্রেমলিন শুরু থেকেই এসব অভিযোগ অস্বীকার করার পাশাপাশি নাভালনির মৃত্যুর পর পশ্চিমাদের প্রতিক্রিয়াকে ‘উসকানি’ হিসেবে দেখছে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নাভালনির মৃত্যুর পর কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, হেঁটে আসার পর হঠাৎই অচেতন হয়ে পড়েছিলেন পুতিনের এই সমালোচক, এরপর আর জ্ঞান ফেরেনি তার।
নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ জানিয়েছেন, বিরোধী এই নেতার মরদেহ কোথায় কিভাবে সমাহিত করা হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার কর্তৃপক্ষের নেই। তাই এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি হননি নাভালনির মা লিউডমিলা।
মুখপাত্র বলেন, “তার (নাভালনির মা) দাবি, আইনানুযায়ী, তদন্তকারীরা যেন মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়ার দুইদিনের মধ্যে মরদেহ হস্তান্তর করে।”
দুইদিনের সেই আইনি বাধ্যবাধকতা শেষ হচ্ছে শনিবার।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার সান ফ্রান্সিসকোতে নাভালনির স্ত্রী এবং মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ওই সাক্ষাতের বিষয়ে পরে হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানায়, অ্যালেক্সি নাভালনির অসাধারণ সাহস, দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং একটি মুক্ত ও গণতান্ত্রিক রাশিয়ার জন্য তার লড়াইয়ের প্রশংসা করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
নাভালনির স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পরদিনই রাশিয়ার ওপর নতুন করে পাঁচ শতাধিক লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাশিয়ার প্রধান কার্ড পেমেন্ট সিস্টেম, আর্থিক ও সামরিক প্রতিষ্ঠান এবং নাভালনির কারাদণ্ডের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারাও রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার কারণ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী অর্থমন্ত্রী ওয়ালি আডিয়েমো রয়টার্সকে বলেছিলেন, ইউক্রেইন যুদ্ধ ও বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহি করাতে চায় ওয়াশিংটন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোও এই নিষেধাজ্ঞায় সামিল হয়েছে।