দৈ. কি.ডেস্ক : বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশি একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ‘নতুন সংবিধানে নিয়মিত সরকারের মেয়াদ হয়তো চার বছর হচ্ছে’ – এমন মন্তব্য করার পর নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে সরকারের মেয়াদ প্রসঙ্গ।
বিএনপি ও জামায়াতসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ে কিছু না বললেও শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা অনেকেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের কাছে তাদের ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়ায় সরকারের মেয়াদ কমিয়ে চার বছর করার ধারণার বিরোধিতা করেছেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নির্বাচিত সংসদ ও সরকারের মেয়াদ এখন পাঁচ বছর। এটিকে কমিয়ে চার বছর করতে হলে বর্তমান সংবিধান সংশোধন করতে হবে এবং বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী সেটি করার এখতিয়ার শুধু মাত্র জাতীয় সংসদের রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ‘নতুন সংবিধান’ বলতে কী বুঝিয়েছেন সেটি এখনো পরিষ্কার নয়। তবে সংবিধান সংস্কারের জন্য সরকারের গঠিত একটি কমিশন এখন কাজ করছে। জানুয়ারিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের রিপোর্ট দেয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টার মন্তব্যে ‘নিয়মিত সরকারের মেয়াদ চার বছর হতে পারে’ বলে একটি ধারণা উঠে এসেছে।
দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশে রাজনৈতিক, নির্বাচনি ও রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে কাজ করে আসছেন বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক বা সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তার মতে সংসদ বা সরকারের মেয়াদ আগে সেভাবে আলোচনায় আসেনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলছেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ কিংবা রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য- এ ধরনের বিষয়গুলো অনেকভাবে আলোচনায় এসেছে।”কিন্তু সরকার বা সংসদের মেয়াদ কমানোর আলোচনা আগে শুনিনি। এর প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্বই বা কোথায় তা বুঝতে পারছি না,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
এদিকে সংসদ ও সরকারের মেয়াদ নিয়ে নানামুখী আলোচনার মধ্যে আজই এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের কর্মকাণ্ডের ফোকাস এক জায়গায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন “সেই ফোকাসটা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করে, প্রশাসনকে ঠিক করে, বিচার ব্যবস্থাকে ঠিক করে নির্বাচনের দিকে যান। বাকিগুলো যারা নির্বাচিত হয়ে আসবে তারা করবে”।
অর্থাৎ বিএনপি চাইছে সংবিধানসহ অন্য যেসব বিষয়ে সংস্কারের যে উদ্যোগ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নিয়েছে সেটি নির্বাচনের পর ক্ষমতায় আসা সরকার করবে।