অনলাইন ডেস্ক:ফজরের আযানের পর পরই শুরু হয় তাদের পথ চলা। কখনও বাসে কখনও বা হেঁটেই। গন্তব্য একটাই, কুড়িঘাট মোড়! লক্ষ্য সারাদিনের রোজগারের জন্য একটা কাজ জুটানো।’দিনে এনে দিনে খাওয়া’ শ্রেণির শ্রমিকদের জন্য কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের কুড়িঘাট মোড় যেন এক বিশেষ জায়গা। ভোরের আলো শুরু হওয়ার আগেই এখানে জড়ো হয়ে যায় তারা।
ধানের বীজতলা সংগ্রহ থেকে রোপণ, পরিচর্যা, ধান কাটা ও মাড়াই সব রকমের কাজের জন্য গৃহস্থের কাছে ওদের বিকল্প নেই। নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে প্রতিদিনই ভোর থেকেই এ মোড়ে অবস্থান থাকে ওদের। নিজ নিজ এলাকায় কাজের অভাব থাকায় সব মিলিয়ে প্রায় ৩শ থেকে ৪শ মানুষ শ্রম বিক্রির জন্য এখানে অবস্থান করে। উপজেলার সিদলা, জিনারী, গোবিন্দপুর, আড়াইবাড়ীয়া, শাহেদল, পুমদি ইউনিয়নের পাশাপাশি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা থেকেও অনেক শ্রমিক কাজের সন্ধানে আসে এখানে।
সারাদিন কৃষকের খেতে শ্রম দিয়ে একেক জন মজুরি পান ৪শ থেকে ৫শ টাকা। নগদ এই টাকার সাথে জুটে কৃষকের ঘরেই পেটপুরে খাওয়া। আর কাজ না পেলে মন খারাপ করেই ফিরতে হয় বাড়িতে। উপজেলা গোবিন্দপুর গ্রাম থেকে কাজের সন্ধানে আসা আ.সাত্তার (৩৫) জানান, নিজের এলাকায় কাজ পাওয়া যায় না। সংসার চালাতে তাই প্রতিদিন সকালেই এখানে আসতে হয়।
দিনভর কঠোর পরিশ্রম শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি গিয়ে গোসল করে নিশ্চিন্ত মনে ঘুম দিই। মাঝে মাঝে কোনও কাজ পাওয়া যায় না।
সব মিলিয়ে মালিক ও শ্রমিক উভয়ের জন্যই কুড়িঘাট মোড় যেন শ্রম বেচা কেনার এক বিরাট হাট। শ্রমিকের নানা রকম সুখ দুঃখের সাক্ষীও এই কুড়িঘাট মোড়। কাজ না পেলে মন খারাপ করে ফিরতে হয় বাড়িতে। ভাগ্যের চাকা হয়তো সেদিন থেমে থাকে। এক মুখ নীরবতা আর দুঃখ নিয়েই হয়তো ফিরতে হয় সেদিন।