ডেস্ক:গোপালগঞ্জে পারিবারিক কলহের জের ধরে জামাতার বিরুদ্ধে শ্বশুরকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের চর ধলইতলা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম বাদশা গাজী (৬৫)। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত জামাতা মুরাদ আলীকে (৪০) আটক করেছে পুলিশ।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিচুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ওসি জানান, মুরাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে। বাদশা গাজীর মরদেহ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত বাদশা গাজীর পরিবার ও পুলিশ জানায়, মুরাদ আলী নড়াইল সদর উপজেলা মাইছকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সৌদি আরবপ্রবাসী ছিলেন। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর ধলইতলা গ্রামের বাদশা গাজীর মেয়ে তানিয়া বেগম তাঁর স্ত্রী। তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে। তানিয়া বেগম ধলইতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। স্ত্রীর চাকরির সুবাদে মুরাদ আলী শ্বশুরবাড়িতেই বসবাস করতেন। গতকাল বৃহস্পতিবার মুরাদ আলী তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি নড়াইলে যান;
আজ দুপুরে নড়াইলের বাড়ি থেকে মুরাদ আলী সন্তানদের নিয়ে আবার শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসেন। দুপুরে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। নামাজের পর শ্বশুর বাদশা গাজী নিজের ঘরে খাটে ঘুমিয়ে ছিলেন। জামাতা মুরাদ আলী ঘরে থাকা বঁটি দিয়ে শ্বশুরকে ঘুমন্ত অবস্থায় উপর্যুপরি কোপাতে থাকেন। একপর্যায়ে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই বাদশা গাজীর মৃত্যু হয়।
পরে পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে এলাকাবাসী মুরাদ আলীকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন, পরে খবর পেয়ে পুলিশ মুরাদ আলীকে আটক করে থানায় নেয়। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুরাদ আলী দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। সৌদি থেকে স্ত্রী তানিয়া বেগমের নামে টাকা পাঠিয়েছেন। তানিয়া বেগম শিক্ষকতার পাশাপাশি গ্রামের এক যুবকের কাছে ফ্রিল্যান্সিং শিখতেন। পাশাপাশি ওই যুবকের ব্যবসায় তানিয়া স্বামীর দেওয়া মোট ১৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। দীর্ঘদিন ওই টাকায় কোনো আয় না হওয়ায় টাকা ফেরত চাওয়া নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে মুরাদ আলীর কলহ লেগে থাকত। সেই কলহে শ্বশুর বাদশা গাজীর হস্তক্ষেপের জেরে মুরাদ আলী শ্বশুরকে গলা কেটে হত্যা করেন।
তানিয়া বেগম জানান, তাঁর স্বামী মুরাদ আলী অনেক বছর সৌদি আরবে চাকরি শেষে বছরখানেক আগে বাড়িতে আসেন। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁকে জাদুটোনা করা হয়েছে এমন অভিযোগে তানিয়ার পরিবারের লোকজনকে দোষারোপ করে আসছিলেন। যে কারণে তিনি সম্প্রতি অস্বাভাবিক আচরণ করে আসছিলেন। আজ সবার অজান্তে তাঁর বাবাকে হত্যা করেছেন মুরাদ।