ইতিহাসে নবাব ঈশা খাঁর ঐতিহ্যের টানাপোড়েন
কিশোরগঞ্জসহ ৪ জেলা নিয়ে বিভাগ গঠনের দাবি

কিশোরগঞ্জকে ময়মনসিংহ বিভাগের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবের পর নতুন এক আলোচনার জন্ম দিয়েছে দেশের মধ্যাঞ্চলে। কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ—এই চার জেলার মানুষ এখন এক স্বতন্ত্র প্রশাসনিক অঞ্চল গঠনের দাবি তুলেছেন, যার নাম হতে পারে ‘প্রেসিডেন্সি বিভাগ’।
স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনিক প্রয়োজনের পাশাপাশি এই দাবির পেছনে রয়েছে গভীর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ভিত্তি। তাদের মতে, বাংলার ইতিহাসে নবাব ঈশা খাঁ ছিলেন পূর্ব বাংলার স্বাধীনতার প্রতীক ও বারো ভুঁইয়াদের নেতা, যিনি মোগল শাসনের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছিলেন শক্তিশালী প্রতিরোধ।
ঈশা খাঁর রাজধানী ছিল সোনারগাঁও ও জয়নগর—যা বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত। তার শাসন ও সামরিক প্রভাব বিস্তৃত ছিল নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ পর্যন্ত। সে সময় এই অঞ্চল গড়ে উঠেছিল এক অদম্য প্রতিরোধ বলয় হিসেবে, যেখানে নদীপথের গতিশীল যোগাযোগই ছিল তার সামরিক শক্তির অন্যতম উৎস।
ইতিহাসবিদদের মতে, নরসিংদীর শীতলক্ষ্যা-মেঘনা, কিশোরগঞ্জের বিশাল হাওর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস ও হবিগঞ্জের পাহাড়ি ভূপ্রকৃতি একত্রে ঈশা খাঁর শাসনব্যবস্থাকে দিয়েছে ভৌগোলিক নিরাপত্তা ও প্রভাবের কেন্দ্রবিন্দু।
আজও এই চার জেলার মানুষ ইতিহাস, ভূগোল, সংস্কৃতি ও জীবনধারায় একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। স্থানীয়রা মনে করছেন, কেবল প্রশাসনিক নয়—ঐতিহাসিক ঐক্য ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের প্রতীক হিসেবেও ‘প্রেসিডেন্সি বিভাগ’ গঠন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।