কটিয়াদীতে নিজের নামে মাদরাসার অনুষ্ঠানে দাওয়াত পায়নি প্রতিষ্ঠাতা!

কটিয়াদিী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের পাঁচগাতিয়া গ্রামে আলহাজ্ব এম এ আব্দুল মান্নান মহিলা দাখিল মাদরাসায় অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলা ও ইউনিয়নের জামায়াত নেতারা দাওয়াত পেলেও পায়নি খোদ প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার এম এ মান্নান। দাওয়াত না পেয়েও অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে মাদরাসাটির সুপারিনটেন্ট মো. গোলাম মোস্তফার নামে তুলেন নানা অভিযোগ।
এসময় স্থানীয় অনেক অভিভাবককেও দাওয়াত না পাওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। দাওয়াতপত্রের মাধ্যমে মূলত দাওয়াত দেওয়া হয় সবাইকে। ৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে অভিভাবক সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয় মাদাসাটির হলরুমে।
অনুষ্ঠানে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাহমুদুল হাসান ও জামায়াত মনোনীত স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মোড়লসহ ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতিকে দেখা যায় বক্তব্য দিতে।
প্রতিষ্ঠাতা অভিযোগ করে বলেন, “১১ বছর আগে বহিষ্কার করা হয় সুপার গোলাম মোস্তফাকে। ১১ টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের মাধ্যমে ২০১৪ সালে প্রাথমিক বহিষ্কার করা হলেও সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় ২০১৭ সালে তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়।”
তিনি আরো বলেন, “তৎকালীন সময়ে শিক্ষকরা এই সুপারকে বহিষ্কার করার জন্য অনাস্থাপত্র জমা দেয় কমিটির কাছে।”
প্রতিষ্ঠাতা এম এ মান্নান অভিযোগ করে বলেন, “সম্প্রতি এই বহিষ্কৃত সুপার স্থানীয় জামায়াতের নেতাদের যোগসাজশে প্রতিষ্ঠানটিতে একরকম জোর করেই প্রবেশ করে। এতে স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও থেম নেই তার কার্যক্রম।”
জানা যায়, মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৮ সালে। এম এ মান্নান নিজের জায়গায় নিজের নামে সম্পূর্ণ নিজ খরচায় ১২ বছর প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। ২০১০ সালের দিকে তার প্রচেষ্টায় এমপিওভুক্ত হয় প্রতিষ্ঠানটি।
তিনি আরো বলেন, “বহিষ্কৃত সুপার বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলাটি চলমান রয়েছে। ১১ বছর ধরেই তিনি প্রতিষ্ঠানে আসেননি। হঠাৎ করে সরকার পরিবর্তনের পর জামায়াতের লোকজন নিয়ে মাদরাসায় জোর করে প্রবেশ করে।”
সুপারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, ঠিকমতো মাদরাসায় না আসা, অভিভাবকদের কাছ থেকে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নেওয়াসহ নানা অভিযোগ তুলেন এই প্রতিষ্ঠাতা।
এ নিয়ে সুপার গোলাম মোস্তফা দাবি করেন সম্পূর্ণ বৈধ প্রক্রিয়ায় ইউএনও মো: মাঈদুল ইসলামের অনুমতি নিয়েই তিনি মাদরাসার কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করছেন। তিনি বৈধ সুপার বলেও দাবি করেন।
স্থানীয় অভিভাবক ও লোকজনের ভাষ্য, একজন বহিষ্কৃত বিতর্কিত ব্যক্তিকে সুপার হিসেবে তারা দেখতে চান না।
এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সুপারের পক্ষে বিপক্ষে দুটি গ্রুপকে সক্রিয় দেখা গেছে। স্থানীয়রা দাবি করেন সুপারের যোগদান নিয়ে বড় ধরণের সংঘাত হতে পারে এলাকায়।
প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার এম এ মান্নান তার নিজের নামেই এ মাদরাসটি প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি এলাকায় বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। মাদারাসা গেইটের সামনেই তার নিজস্ব অফিসে কথা হয় সংবাদকর্মীদের।
তিনি বলেন, “মহিলা দাখিল মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত করেছি এলাকার কল্যাণে। সুপার নিয়ে যেনো কোনো দ্বন্ধের সৃষ্টি না হয়। বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে নতুন কাউকে সুপার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি ও স্থানীয়রা।”