নিজের নামের আগে ‘কিংবদন্তি’ পছন্দ নয় মোশাররফ করিমের

বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। নাটক, সিনেমা ও ওয়েব প্ল্যাটফর্ম—সব জায়গাতেই তাঁর উপস্থিতি এখন নিয়মিত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর নামের সঙ্গে ভক্তরা যে বিশেষণ যুক্ত করছেন, তা একেবারেই পছন্দ নয় এই অভিনেতার।
ইদানীং অনেকেই তাঁর নামের আগে “কিংবদন্তি” শব্দটি ব্যবহার করছেন। বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন মোশাররফ করিম। তিনি বলেন, “আমি একটা কাজ করলাম, দর্শক দেখলেন, ভালো লাগল—এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় বিষয়। কেউ প্রশংসা করবেন, সেটাই যথেষ্ট। কিন্তু আমার নামের আগে খেতাব বা বিশেষণ জুড়ে দেওয়া—এটা আমাকে অস্বস্তি দেয়। আমি এসব পদবি বা উপাধি চাই না, এগুলোর কোনো প্রয়োজনও দেখি না।”
মোশাররফ করিমের সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র ‘ইনসাফ’ মুক্তির আগে নির্মাতা তাঁর নামের আগে “কিংবদন্তি” শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। সেই প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, “সিনেমার টাইটেলে আমার নামের আগে কিংবদন্তি শব্দটা ব্যবহার করেছিলেন পরিচালক। তখন কিছু বলিনি, কিন্তু এটা আমার কাছে স্বস্তিকর লাগেনি। আমি চাই না, কেউ আমাকে এভাবে উপাধি দিক। আমি এখনো শেখার পথে আছি।”
‘ইনসাফ’ ছবিতে প্রথমবারের মতো অ্যাকশনধর্মী চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। এক প্রতিবাদী চিকিৎসকের ভূমিকায় দেখা গেছে তাঁকে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “এই চরিত্রটা আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। সন্তুষ্টির জায়গা আছে, কিন্তু মনে হয়েছে আরও ভালো করা যেত। বিশেষ করে অ্যাকশন দৃশ্যগুলো আমার কাছে কঠিন ছিল, কারণ আমি কখনো মারামারির দৃশ্যে কাজ করিনি। শারীরিকভাবেও তখন পুরোপুরি সুস্থ ছিলাম না। তবে ইউনিটের সবাই আন্তরিক ছিলেন, তাই কাজটা করতে পেরেছি।”
বহু বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে নাটক, সিনেমা ও ওটিটিতে কাজ করে যাচ্ছেন মোশাররফ করিম। ব্যস্ততার কারণে কখনো কখনো ক্লান্তিও এসে যায়, কিন্তু অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা তাঁকে আবার ফিরিয়ে আনে ক্যামেরার সামনে।
তিনি বলেন, “অনেক সময় টানা কাজ করতে করতে ক্লান্তি আসে। মনে হয়, সবকিছু ছেড়ে দিই, কিছুদিন বিশ্রাম নিই। কিন্তু যখন ১৫-২০ দিন কাজ করি না, তখন মনে হয় কিছু একটা মিস করছি। সেই সময় অভিনয়ের মাঠে ফিরলেই মনটা আবার ভরে যায়। রিহার্সেল, আলোচনার মধ্যে ফিরে এসে শান্তি পাই। এই জায়গাটাই আমার আশ্রয়।”
দর্শকের ভালোবাসাকেই নিজের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে মনে করেন এই অভিনেতা। তাঁর ভাষায়, “আমি অভিনেতা, আমার কাজ মানুষকে আনন্দ দেওয়া, চিন্তা জাগানো। তাই আমার নামের আগে কোনো বিশেষণ নয়—আমার কাজই যেন আমার পরিচয় হয়ে থাকে, এটাই আমার চাওয়া।”