গাজা যুদ্ধবিরতি ও বন্দি মুক্তি নিয়ে মিসরে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধি

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি মুক্তি বিষয়ক আলোচনার জন্য মিসরে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রতিনিধিদল। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) হামাসের মুখপাত্র ফাওজি বারহোম জানিয়েছেন, তাদের প্রতিনিধিরা সেখানে ‘সব বাধা অতিক্রম’ করার চেষ্টা করছেন এবং যুদ্ধবিরতির জন্য নিজেদের প্রধান শর্তগুলো তুলে দিয়েছে।
বারহোম বলেন, হামাস পরোক্ষ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তারা গাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য যে মূল দাবিসমূহ জমা দিয়েছে, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন চায়। হামাসের দাবি প্রধানত গুলোকে তিনি এভাবে উপস্থাপন করেছেন—
একটি স্থায়ী ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হবে।
ইসরায়েলি সেনাকে গাজার সব অঞ্চল থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।
কোনো বাধা ছাড়াই গাজায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।
বাস্তুচ্যুত সাধারণ গাজাবাসীকে তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে দিতে হবে।
গাজা পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের কাজ শুরু করতে হবে এবং তা পরিচালনা করবে একটি ফিলিস্তিনি জাতীয় প্রশাসন।
বন্দি বিনিময় সংক্রান্ত একটি ন্যায্য ও সমান্তরাল চুক্তি করতে হবে।
বারহোম আরও অভিযোগ করেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু পূর্বে যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা ‘আটকানো ও ব্যর্থ’ করার চেষ্টা করেছেন এবং এ রকমই আচরণ এখনো দেখা যাচ্ছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বিভীষিকামোদী সামরিক হামলা ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার পরও ইসরায়েল গাজায় জয় দাবি করতে পারেনি।
একই সঙ্গে হামাস একটি বিশেষ দাবি তুলে করেছে—দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে থাকা তাদের কয়েকশীর্ষ নেতার মুক্তি। প্রস্তাবিত তালিকায় আছেন মারওয়ান বারঘোতি, আহমেদ সাদাত, ইব্রাহিম হামেদ, হাসান সালেমেহ ও আব্বাস সায়েদ। বারহোম জানান, পূর্ববর্তী যুদ্ধবিরতিকে কাজে লাগিয়ে এসব নেতাকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব ইসরায়েল মেনে নেনি; এবার হামাস তা শেষ সুযোগ হিসেবে দেখছে।
মিসরে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার পরও পরিস্থিতি চূড়ান্ত হয়নি; দুই পক্ষের প্রতিফলন ও বাস্তবায়নযোগ্যতা যাচাই হওয়ার অপেক্ষা রয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উদ্বেগ, যেহেতু পূর্বের বহুল প্রচারিত যুদ্ধবিরতি আলোচনা বাস্তবায়নের পরও পুনরায় সহিংসতা ফিরে এসেছে, ফলে এই দফায়ও স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করা হচ্ছে।