ফ্যাসিস্ট নূর মোহাম্মদে প্রভাবিত রেলওয়ে কর্মকর্তা, সরকারি সম্পদের অপব্যবহার
কিশোরগঞ্জে রেলওয়ের একটি রেল চেক (ক্রসিং রাস্তা) নির্মাণকে কেন্দ্র করে অনিয়ম ও সরকারি সম্পদ অপব্যবহারের অভিযোগ তীব্র হচ্ছে। অভিযোগকারীরা বলছেন, সরকারি জনবল ও সরঞ্জাম ব্যবহার করে মানিকখালী রেলস্টেশনের কাছে এই রেল চেক তৈরি করা হচ্ছে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ফ্যাসিস্ট সরকার প্রধান শেখ হাসিনার আমলে ক্ষমতাসীন হয়ে ওঠা সাবেক পুলিশ প্রধান, পরবর্তীতে সচিব ও কূটনৈতিক দায়িত্ব পালনকারী এবং সাবেক সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের ব্যক্তিগত যাতায়াত সুবিধার্থে। স্থানীয়দের দাবি, ফ্যাসিস্ট আমলের দোসর ও স্বৈরাচারের সহচর হিসেবে পরিচিত নূর মোহাম্মদ এখনও তার অবৈধ অর্থ ও পুরোনো ক্ষমতার প্রভাব ব্যবহার করে সরকারি সম্পদ ও রেল প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করছেন।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, কটিয়াদি উপজেলার মানিকখালী রেলস্টেশনের নিকট সেকশন কি.মি. ২৬৫/৪–৫ এলাকায় রেল চেক নির্মাণ চলছে। স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল মিয়া বলেন, “সরকারি অর্থ ব্যবহার করে ব্যক্তিগত সুবিধা দেওয়ার এমন দৃশ্য এই প্রথম দেখলাম।” এক স্থানীয় ব্যবসায়ী জানান, সংশ্লিষ্ট উপসহকারী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান রাজনের বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় নূর মোহাম্মদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ও দোসর সম্পর্কের কারণে সরকারি কাজকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে।
রেলওয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, নিয়মনীতি অনুসরণ করা হয়নি। তাদের দাবি, এই ধরনের রেল ক্রসিং নির্মাণে বাংলাদেশ রেলওয়ের General Instruction Book of Railway (GIBR) অনুযায়ী লিখিত অনুমোদন বাধ্যতামূলক এবং গেটম্যান নিয়োগ ছাড়া কোনো রেল চেক চালু করা যায় না।
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী (সি–ই) তানভীর আহম্মেদ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডিইএন–২) আহসান হাবীব বলেন, “অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” উপসহকারী প্রকৌশলী (এইএন), ভৈরববাজার, জাহিদ হাসান জানান, “মানিকখালী এলাকায় কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তা তদন্তের মাধ্যমে যাচাই করা হবে।”
অভিযুক্ত ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) আনিসুজ্জামান অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এখানে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত থাকায় মেরামতের কাজই করা হয়েছে।”
ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেউ অনিয়ম, অবৈধ অর্থের প্রভাব ও ফ্যাসিস্ট আমলের দোসরদের ছায়াশক্তির আশঙ্কা করছেন; কেউ আবার বিশ্বাস করছেন তদন্তের পর সত্য স্পষ্ট হয়ে উঠবে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ—নূর মোহাম্মদ তার পূর্বের ক্ষমতা ও সুবিধাভোগী নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে রেলওয়ের কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করছেন এবং সরকারি সম্পদ নিজের সুবিধায় কাজে লাগাচ্ছেন।













