বেফাঁস কথা বলে বিএনপি নেতা সান্টু আবারও আলোচনায়
‘নেতাকর্মীরা যে চাঁদাবাজি করেছে আমি তাদের করতে দিছি’

বরিশালের উজিরপুরে বিএনপি নেতা সরদার সরফুদ্দিন সান্টুর এক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ওই বক্তব্যে তিনি দাবি করেছেন, তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা গত এক বছর ধরে চাঁদাবাজি করেছেন এবং তিনি নিজে তাদের ‘করতে দিয়েছেন’।
ভিডিও ফুটেজে তাঁকে বলতে শোনা যায়— “গত এক বছর বিএনপি নেতাকর্মীরা যে চাঁদাবাজি করেছে, সেটা আমি তাদের করতে দিছি। কারণ গত ১৭ বছর নেতাকর্মীরা কিছু খায় নাই। অবস্থা কিন্তু ভালো না। দল ক্ষমতায় না এলে কিছু পাবেন না।”
এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পর বরিশাল-২ (বানারীপাড়া–উজিরপুর) আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী এই বিএনপি নেতাকে নিয়ে নানা মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী বিষয়টি দলীয় ভাবমূর্তির জন্য বিব্রতকর বলেও মন্তব্য করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই মাসে বানারীপাড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের পর একটি মতবিনিময় সভায় সরদার সরফুদ্দিন সান্টু এই বক্তব্য দেন। সভাটি উজিরপুরের গুঠিয়া এলাকার একটি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি গোলাম মাহমুদ মাহবুব মাস্টার। তিনি বলেন, “সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং সান্টু ভাই এমন মন্তব্য করেছিলেন। আমার মনে হয়, এটি মুখ ফসকে বলা কথা।”
তবে বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মৃধা দাবি করেন, “ভিডিওটি হয়তো সম্পাদনা করে ছড়ানো হয়েছে। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না এটি কোন সভার।”
অন্যদিকে একই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ও কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশবিষয়ক সহসম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু বলেন, “ভিডিওটি সম্পাদিত নয়। তিনি (সান্টু) একের পর এক বেফাঁস কথা বলে দলকে বিব্রত করছেন।”
সান্টুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সান্টু দীর্ঘ সময় বিদেশে অবস্থান করার পর গত বছর দেশে ফেরেন। এরপর থেকে নির্বাচনী এলাকায় সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। স্থানীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দলীয় একাংশের সঙ্গে তাঁর বিরোধও রয়েছে।
এর আগে একাধিক অনুষ্ঠানে দলীয় শীর্ষ নেতাদের নাম উল্লেখ করে বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ায় সান্টু ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় পর্যায়েও আলোচিত হয়েছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের আগমুহূর্তে এ ধরনের বক্তব্য শুধু দলের জন্য নয়, বরিশাল অঞ্চলের রাজনৈতিক পরিবেশের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।