খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল-এর কলম
গাজার মুক্তি মানে মানবতার মুক্তি

গাজার আকাশ প্রতিদিনই ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে অসংখ্য নারী ও শিশু। হাসপাতাল ভেঙে পড়ছে, বিদ্যুৎ ও পানির অভাবে মানুষ বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কারাগার বলে পরিচিত এই গাজা উপত্যকা আজ রক্তাক্ত মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। দখলদার ও জায়নবাদী শক্তির লাগাতার হামলায় পুরো অঞ্চল পরিণত হয়েছে এক মানবিক বিপর্যয়ে।
প্রশ্ন হচ্ছে—এই দৃশ্য দেখে কি পৃথিবীর বিবেক নীরব থাকতে পারে? আমরা যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থার ওপর আস্থা রাখি, তারা কোথায়? মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের বুলি যারা মুখে মুখে আওড়ায়, তারা কেন গাজার শিশু হত্যার ঘটনায় নিশ্চুপ? সত্য হলো, বৈশ্বিক ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর চোখে ফিলিস্তিনিদের রক্তের কোনো মূল্য নেই। তাদের মানবাধিকার কেবল শক্তিধরদের জন্য সংরক্ষিত।
বাংলাদেশের মানুষ ফিলিস্তিন প্রশ্নে সবসময় ঐতিহাসিক অবস্থান নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি, দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে টিকে থাকতে আন্তর্জাতিক সমর্থন কতটা জরুরি। আজ গাজার মানুষও সেই নৈতিক সমর্থনের প্রত্যাশায় তাকিয়ে আছে। আমাদের শুধু বিবৃতি নয়, কূটনৈতিক অঙ্গনেও শক্ত অবস্থান নিতে হবে। মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে বাংলাদেশকে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে।
তবে শুধু মুসলিম রাষ্ট্রের নয়, গোটা বিশ্বের দায়িত্ব আছে গাজার পাশে দাঁড়ানোর। কারণ, গাজা কেবল একটি ভূখণ্ডের নাম নয়; এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক। গাজার প্রতিটি রক্তধারা মানবতার কাছে প্রশ্ন রাখছে—আমরা কি শুধু দর্শক হয়েই থাকব?
আজ যদি বিশ্ব নির্লিপ্ত থাকে, আগামীকাল অন্য কোনো গাজা সৃষ্টি হতে দেরি হবে না। ন্যায়ের পাশে দাঁড়ানো এখনই জরুরি। মানবতার স্বার্থেই আমাদের স্পষ্ট উচ্চারণ করতে হবে—গাজার মুক্তি মানে মানবতার মুক্তি।